মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অটলবিহারী বাজপেয়ী। —ফাইল চিত্র।
তিনি ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ নেতা। বিভিন্ন মতকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পারতেন। সব সময় জোট শরিকদের কথা শুনতেন। আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর বাড়িতে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এ ভাবেই প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে নিজের মত প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মাসখানেক আগে বিরোধী জোটের সলতে পাকাতে দিল্লি এসেছিলেন মমতা। সেই সময়ে এইমসে ভর্তি বাজপেয়ীকে গিয়ে দেখে এসেছিলেন তিনি। বাজপেয়ীর শারীরিক অসুস্থতার অবনতি হয়েছে খবর পেয়ে আজ বিকালেই দিল্লির বিমান ধরেন তিনি। ঠিক ছিল, বিমানবন্দর থেকে সোজা হাসপাতালে যাবেন মমতা। কিন্তু দিল্লি নেমেই খবর পান, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মারা গিয়েছেন। মমতা চলে আসেন সাউথ অ্যাভিনিউয়ে। পরে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাজপেয়ীর বাড়িতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যান মমতা। সে সময় মমতাকে জড়িয়ে ধরেন বাজপেয়ীর পালিতা কন্যা নমিতা ভট্টাচার্য। মমতার কাঁধে কিছুক্ষণ মাথাও রাখেন শোকার্ত নমিতা।
বাজপেয়ীর বাসভবনে মমতার সঙ্গে দেখা হয় লালকৃষ্ণ আডবাণীর। দীর্ঘদিনের সঙ্গীকে হারিয়ে শোকবিহ্বল আডবাণী মমতাকে দেখে বলেন, ‘‘চলো মমতা, দর্শন করে আসি।’’ বাজপেয়ীর সঙ্গে আডবাণীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা অজানা নয় মমতার। তিনি বলে ওঠেন, ‘‘আপনি আগে যান। তার পরে আমি যাচ্ছি।’’ মমতার কথা শুনে আডবাণী ভিতরে যান বাজপেয়ীকে শ্রদ্ধা জানাতে। সামান্য পরেই ভিতরে ঢোকেন মমতাও।
দীর্ঘ দিন বাজপেয়ীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কাজ করেছেন মমতা। তৃণমূল নেত্রীকে যথেষ্ট স্নেহ করতেন বাজপেয়ী। পরবর্তী কালে রাজনৈতিক দূরত্ব এলেও বাজপেয়ীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে কখনও কার্পণ্য করেননি তৃণমূল নেত্রী। তা তিনি কেন্দ্র যে জোটের সঙ্গেই থাকুন না কেন। মমতার কথায়, ‘‘বাজপেয়ীজির সরকারে আমি কাজ করেছি। ওনার সবচেয়ে বড় গুণ ছিল তিনি সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে পারতেন। তাই নীতীশ কুমার, নবীন পট্টনায়ক, জয়ললিতা বা আমি এক সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ ছিলেন তিনি। বৈষম্য করতেন না।’’
দৃশ্যতই আজ মমতা ছিলেন শোকবিহ্বল। তিনি বলেন, ‘‘২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পরে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তখন কথা বলতে চাইছেন, কিন্তু বলতে পারছেন না। চোখ ভরে গিয়েছিল জলে। দেখে খুব খারাপ লেগেছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy