Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সীমান্তে চিনের অতিসক্রিয়তা নিয়ে চিঠি মমতার

কাশ্মীরের বিক্ষোভে চিন উস্কানি দিচ্ছে বলে গত কালই অভিযোগ করেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। মুফতির আগেই অবশ্য, দার্জিলিং প্রশ্নে আধা সেনা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক টানাপড়েনের মধ্যেই পূর্ব সীমান্তে চিনের আস্ফালন নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজনাথ সিংহ।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজনাথ সিংহ।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৫
Share: Save:

মেহবুবা মুফতি একা নন, পূর্ব সীমান্তে চিনের অতিসক্রিয়তা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

কাশ্মীরের বিক্ষোভে চিন উস্কানি দিচ্ছে বলে গত কালই অভিযোগ করেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। মুফতির আগেই অবশ্য, দার্জিলিং প্রশ্নে আধা সেনা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক টানাপড়েনের মধ্যেই পূর্ব সীমান্তে চিনের আস্ফালন নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠি লিখে মমতা জানিয়েছেন, চিনের জন্য তাঁর রাজ্যের নিরাপত্তা বিপদের মুখে। কেন না গত কয়েক বছরে ভুটান ও নেপালে চিনের সক্রিয়তা অনেক বেড়েছে। যার ছায়া পড়ছে দার্জিলিঙেও। শেখ হাসিনার দেশেও প্রভাব বাড়াতে চাইছে চিন।

তৃণমূলের অবশ্য অভিযোগ, কেন্দ্রের ভুল বিদেশনীতিই এর জন্য দায়ী। সীমান্তে ভারতের অযথা শক্তি প্রদর্শনেই চিন অতিসক্রিয়তার কৌশল নিয়েছে। আখেরে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গকে। দার্জিলিং-ই শুধু নয়, প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তা। যার মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে স্থলপথে যুক্ত গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে উত্তর-পূর্ব সীমান্তে চিনের প্রভাব রুখতে অবিলম্বে কেন্দ্রকে তৎপর হওয়ার অনুরোধ করেন মমতা। সূত্রের খবর, চিঠি ছাড়া ফোনেও একাধিক বার এ বিষয়ে রাজনাথকে বিস্তারিত জানান মমতা।

আরও পড়ুন: খাদে বাস, মৃত ১৬ অমরনাথ তীর্থযাত্রী

বাদল অধিবেশনের শুরুর ঠিক আগে দার্জিলিংয়ের পরিস্থিতি, আধাসেনা পাঠানো নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের এখনও মীমাংসা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সংসদের অধিবেশন শুরু হলেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিকে পাশে নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব যে দার্জিলিং প্রশ্নে সরব হবে, তা বুঝতে পারছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই আজ তিনি রাজনাথকে জানিয়ে দিয়েছেন, দার্জিলিং নিয়ে বিরোধীরা আলোচনা চাইলে যেন মেনে নেয় সরকার। কেন্দ্র মনে করছে, সে ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থানটি জানানোর সুযোগও থাকবে। কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার দার্জিলিঙের পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে, আধা সেনা নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বের প্রকৃত কারণটাই বা কী, তা-ও দেশবাসীর কাছে তুলে ধরার সুযোগ পাবে সরকার।

এ দিন সন্ধ্যায় স্পিকারের ডাকা সর্বদল বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দার্জিলিঙে অচলাবস্থা চলার প্রসঙ্গ তুলে বাদল অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, দার্জিলিঙের গন্ডগোলে চিনের টাকা আসছে, অস্ত্র আসছে। এটা বন্ধ করতে কেন্দ্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। অন্য দলের সাংসদরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সরকার পক্ষ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে সব পক্ষই অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চান।

দার্জিলিঙে গোপন মধ্যস্থ হিসেবে সুভাষচন্দ্রের পরিবারের সদস্য বিজেপি নেতা চন্দ্রকুমার বসুর নাম কোনও কোনও মহল তুলেছে। আজ তা উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্র— উভয় পক্ষই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE