সৌজন্য: শরদ পওয়ার এবং প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে তৃতীয় ইউপিএ-তে যোগ দিতে রাজি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী চান, তাঁর প্রস্তাবিত ফ্রন্টকে সমর্থন করুক কংগ্রেস। সে কারণে, রাহুলের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করে আজ সারাদিন রাজধানীতে ফেডারাল ফ্রন্ট গঠনে সক্রিয় রইলেন তিনি।
শরদ পওয়ার থেকে শুরু করে কানিমোজি, ফারুক আবদুল্লাদের মমতা আজ বুঝিয়েছেন, ২০১৯-এর আগে তাঁরা যেন তাঁর প্রস্তাবিত ফেডারাল ফ্রন্টে যোগ দেন। পওয়ার ওই প্রস্তাবে রাজি নন। উল্টে কংগ্রেস তাঁকে ইউপিএ-র আহ্বায়ক করার প্রস্তাব দিয়েছে। ডিএমকে নেত্রী কানিমোজি, এনসি নেতা ফারুকও ইউপিএ ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দেননি।
তবে রাহুলের সঙ্গে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকলেও কংগ্রেসের জন্য দরজা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চান না মমতা। বস্তুত আগামিকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এ দিন মমতা বলেন, ‘‘সনিয়াজি তো কংগ্রেস।’’ তৃণমূল সূত্র বলছে, আসলে রাহুলের নেতৃত্ব মানতে রাজি নন মমতা। এবং সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করলেও তৃতীয় ফ্রন্ট নিয়ে তাঁর অবস্থানের কোনও বদল হচ্ছে না।
এ দিন বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেও, অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রশংসা করে মমতা বলেছেন, ‘ভাল মানুষ’। রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও কাজ করতে তাঁর অসুবিধা হয়নি। পাশাপাশি, নরেন্দ্র মোদীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি তিনি।
রাজধানীতে প্রশ্ন উঠেছে, মমতার কৌশল তবে কী। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, আগামী লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের অধিকাংশই দখল করার ব্যাপারে দল আত্মবিশ্বাসী। সে ক্ষেত্রে মোদীর বিকল্প প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক শক্তিতে পরিণত হবেন মমতা। দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদ, নেতা ও কর্মী তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। প্রধানমন্ত্রী পদের ‘দাবিদার’ মমতাও আজ আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জনসংযোগে সক্রিয় ছিলেন। মমতার প্রধানমন্ত্রিত্বের সম্ভাবনা রাজ্যে তাঁর ভোট ব্যাঙ্কের প্রসার ঘটাবে বলেই তৃণমূল নেতাদের ধারণা। ঠিক যেমন হয়েছিল গত ভোটে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ক্ষেত্রে।
মঙ্গলে অবস্থান
রাহুলের পাশে
এনসিপি, ডিএমকে, এনসি, সপা, বিএসপি, আরজেডি, জেএমএম, কেরল কংগ্রেস, মুসলিম লিগ, আরএলডি, জেভিএম, সিপিআই
মমতার পাশে
টিআরএস, টিডিপি, আপ
মোদীর পাশে
শিবসেনা, অকালি, এলজেপি, জেডিইউ, অপনা দল, পিডিপি, আরপিআই
সিদ্ধান্ত নেয়নি যারা
বিজেডি, এডিএমকে, সিপিএম
তবে মমতা এটাও বুঝতে পারছেন যে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মোদীর বিকল্প সরকার গঠন করা কঠিন। তাই তিনি তৃতীয় ফ্রন্টকে এমন শক্তিশালী করতে চান, যাতে আগামী লোকসভা ভোটে ফ্রন্টের আসন সংখ্যা কংগ্রেসের থেকে বেশি হয়। মমতার হিসেব, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস বাইরে থেকে ফ্রন্টকে সমর্থন করতে বাধ্য হবে।
কিন্তু মোদীকে বাদ দিয়ে রাজনাথ বা অন্য কারও নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটকে কি মমতা সমর্থন দিতে পারেন? কংগ্রেস নেতারা কিন্তু মনে করছেন সেটা অসম্ভব। কারণ, ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে মমতার। তাই আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গে দর কষাকষি করছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy