ফাইল ছবি
আগামী শুক্রবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় বিরোধী দলগুলির আনা অনাস্থা প্রস্তাবে হাজির থাকার জন্য ৩৪ জন তৃণমূল সাংসদকে হুইপ জারি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের জনসভা। শুক্রবার অনেক রাত পর্যন্ত লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং ভোটাভুটি চললে ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে পৌঁছতে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তার পরেও বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে মমতা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য। সাংসদদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে— শুক্রবার যত রাতই হোক, চিন্তা করতে হবে না। ভোটাভুটি শেষ না-হওয়া পর্যন্ত সাংসদরা অধিবেশন ছেড়ে বেরোবেন না। দরকারে শনিবার ভোরের বিমানে কলকাতা ফিরবেন।
তবে দলীয় সূত্র এ-ও বলছে, অনাস্থা নিয়ে কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে মমতা ক্ষুব্ধ। তৃণমূল নেত্রী মনে করেন, উনিশের ভোটের আগে এই অনাস্থা ভোটে লাভের চেয়ে ক্ষতিই হবে বেশি। কেননা লোকসভায় আসন সংখ্যার নিরিখে ভোটাভুটি হলে বিরোধীদের পরাজয় নিশ্চিত। বুধবার নবান্নেও মমতা বলেন, ‘‘এটা আসল অনাস্থা নয়। সাত-আট মাস পরে আসল অনাস্থা আনবে জনগণ। সংসদের ভিতরে ওদের সংখ্যা আছে, বাইরে নেই। (তবে) বৃহত্তর স্বার্থে আমরা থাকব।’’ মমতার ক্ষোভের আর একটি কারণ, অনাস্থা নিয়ে আগে তাঁর পরামর্শ নেওয়া হয়নি। গত কাল কংগ্রেসের এক দ্বিতীয় সারির নেতা তৃণমূলের এক সংসদীয় নেতাকে বিষয়টি জানিয়ে দলের সমর্থন চান। কংগ্রেসের এই আচরণে নেত্রী ক্ষুব্ধ। তাই অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিসে সই করেননি কোনও তৃণমূল সাংসদ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত কাল কংগ্রেস, সিপিএম-সহ আটটি বিরোধী দলের নেতারা ট্রেজারি বেঞ্চের বিরুদ্ধে সংসদীয় অবমাননার অভিযোগ এনে স্পিকারকে যে যৌথ চিঠি লিখেছেন, তাতেও থাকেনি তৃণমূল।
আজ লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবটি আনার সময়ে হাজির ছিলেন তৃণমূলের সৌগত রায়, দীনেশ ত্রিবেদী এবং অনুপম হাজরা। তৃণমূলের প্রাথমিক অবস্থান ছিল ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান সাঙ্গ হলে তার পর সংসদীয় দল বৈঠকে বসবে। সেখানে মমতা এ বারের সংসদীয় অধিবেশনে দলীয় ভূমিকা নিয়ে নির্দেশ দেবেন। শুক্রবার পর্যন্ত নামমাত্র সাংসদের উপস্থিতি রাখা হবে লোকসভা-রাজ্যসভায়। আজ যখন এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বিরোধী সাংসদেরা উঠে দাঁড়ান, সৌগত-দীনেশরাও ওঠেন। যুক্তি ছিল, প্রস্তাবে সমর্থন না-করলে বিরোধী ঐক্যের প্রশ্নে ভুল বার্তা যাবে। কিন্তু স্পিকার এই প্রস্তাব মেনে শুক্রবারই ভোটাভুটির দিন ধার্য করে দেওয়ায়, গোটা বিষয়টি মমতাকে জানানো হয়। সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেননি তৃণমূল নেত্রী। অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় মোদী সরকারের সমালোচনার সুযোগ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন মমতা। সেটি কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy