Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

মহিলাদের শৌচকর্মের ছবি তুললেন পুরকর্মীরা, প্রতিবাদ করায় পিটিয়ে খুন!

দু’পক্ষের মধ্যে যখন বিষয়টি নিয়ে বচসা চলছে, সেই সময় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন বছর পঞ্চান্নের ব্যক্তি তথা রাজনৈতিক কর্মী নেতা জাফর খান। বিষয়টি জানার পর পুরকর্মীদের তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, স্বচ্ছতা অভিযানের নামে এ ভাবে মহিলাদের ‘অসম্মান’ করা ঠিক নয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ১৪:০৫
Share: Save:

সকাল সাড়ে ৬টা। নিত্য দিনের মতোই কাছি বস্তির মহিলারা একে একে লোটা হাতে পাশের একটি খোলা জায়গায় সবে শৌচকর্ম শুরু করেছেন। হঠাত্ই জনা ছয়েক লোককে সেই সব ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে দেখা যায়! চরম অস্বস্তিতে পড়েন মহিলারা। কোনও রকমে আব্রু সামলে তাঁরা সকলে রে রে করে তেড়ে যান। কী হচ্ছে? হঠাত্ এমন অসভ্যের মতো ছবি তোলা কেন? প্রশ্নের মুখে জানা যায়, তাঁরা পুরসভার কর্মী। খোলা জায়গায় শৌচকর্ম আটকাতে গ্রামবাসীদের মধ্যে সচেতনতা প্রচার অভিযানে বেরিয়েছেন। কিন্তু, তাই বলে এ ভাবে ছবি তোলা হবে!

আরও পড়ুন: স্পাতে গেলেন, বাহুবলী-২ দেখলেন, তার পর পালালেন কয়েদি সাধ্বী

দু’পক্ষের মধ্যে যখন বিষয়টি নিয়ে বচসা চলছে, সেই সময় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন বছর পঞ্চান্নের ব্যক্তি তথা সমাজকর্মী নেতা জাফর খান। বিষয়টি জানার পর পুরকর্মীদের তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, স্বচ্ছতা অভিযানের নামে এ ভাবে মহিলাদের ‘অসম্মান’ করা ঠিক নয়। পাশাপাশি তিনি ওই কর্মীদের জানান, কাছি বস্তির প্রতিটি ঘরে শৌচালয় নেই। ফলে বাধ্য হয়েই খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করতে যান মহিলারা। কমিউনিটির যে শৌচালয় রয়েছে সেটা ব্যবহারের যোগ্য নয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাফর যখন পুরকর্মীদের গোটা বিষয়টি বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেন তখনই তাঁর প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠেন ওই পুরকর্মীরা। অভিযোগ, জাফরকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন তাঁরা। তার পর সেখান থেকে তাঁরা চম্পট দেন। জাফরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাটি ঘটে রাজস্থানের উদয়পুরের প্রতাপগড় শহরের কাছি বস্তি এলাকায়।

জাফরের মৃত্যুর পরই উত্তাল হয়ে ওঠে কাছি বস্তি এলাকা। পুরকর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। প্রায় দু’ঘণ্টা ১১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বস্তির মানুষরা। দাঙ্গার আশঙ্কা করেই ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। প্রশাসনিক কর্তারা ঘটনাস্খলে গিয়ে বস্তির মানুষদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। জাফরের ভাই নুর মহম্মদ পুরকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অন্য দিকে, পুলিশ পুর কমিশনার এবং ওই ছয় কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে। নুর মহম্মদের অভিযোগ, পুরকর্মীরা মহিলাদের ভয় দেখিয়ে ছবি তোলেন। দাদা বাধা দিতে গেলে তাঁর উপর চড়াও হন অভিযুক্তরা।

তবে, প্রতাপগড় পুরসভা জাফরকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ অস্বীকার করে। তাদের দাবি, বচসার সময় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জাফর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE