Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শেষবেলায় জটিলতা মেঘালয়-নাগাল্যান্ডে

মেঘালয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গত কালই এনপিপি নেতা তথা প্রয়াত পূর্ণ সাংমার ছেলে কনরাডের নাম ঘোষণা করেছিল এনডিএ। রাতে ১১ জন মন্ত্রীর নামও চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু আজ কংগ্রেসের পাল্টা চালে ফের টালমাটাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৩
Share: Save:

দিনভর নাটকে জমজমাট মেঘালয়-নাগাল্যান্ড। ফলে ২৪ ঘণ্টা আগেও পাহাড়ি দুই রাজ্যে সরকার গড়ার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা বিজেপি আচমকাই চিন্তায়!

মেঘালয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গত কালই এনপিপি নেতা তথা প্রয়াত পূর্ণ সাংমার ছেলে কনরাডের নাম ঘোষণা করেছিল এনডিএ। রাতে ১১ জন মন্ত্রীর নামও চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু আজ কংগ্রেসের পাল্টা চালে ফের টালমাটাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিদায়ী কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী, মুকুল সাংমা জানিয়ে দেন তাঁরা ছোট দল, ইউডিপি নেতা ডনকুপার রয়কে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাবেন। তিনি হবেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী। দোলাচলে পড়ে যান ডনকুপার। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এনডিএ শিবিরের, বিশেষ করে বিজেপি নেতৃত্বের তৎপরতায় তিনি ফিরিয়ে দেন কংগ্রেসের প্রস্তাব।

কিন্তু হাল ছাড়েনি কংগ্রেস। তারা কথা বলে দুই বিধায়কের দল এইচএসপিডিপি-র সঙ্গে। তার পরেই ওই দলের সভাপতি আরডেন্ট বাসাওমোইত জানান, তাঁরা ভোটের আগেই অ-কংগ্রেসি এবং অ-বিজেপি সরকার সরকার গড়ার কথা বলেছিলেন। তাই বিজেপি-কে সঙ্গে নিয়ে এনপিপি-র সরকার গড়ার চেষ্টায় তাঁরা সামিল হবেন না।

সমস্যা হল, আগামিকালই মেঘালয়ে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ফলে মঙ্গলবারই শপথ নিতে হবে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে। কাল সকাল সাড়ে দশটায় কনরাডকে শপথ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তার পর শক্তিপরীক্ষা হবে বিধানসভায়। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, এইচএসপিডিপি না থাকলেও জোটের পক্ষে ৩২ জন বিধায়ক আছেন। ফলে ৬০ আসনের বিধানসভায় সরকার গড়তে সমস্যা হবে না।

আরও পড়ুন: চোখ কর্নাটকে, জমজমাট ত্রিপুরা উৎসব

অন্য দিকে, নাগাল্যান্ডে নেফিয়ু রিও-র আজই শপথ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং ইস্তফা দিতে অস্বীকার করায় জটিলতা তৈরি হয়। একক বৃহত্তম দল এনপিএফের নেতা জেলিয়াং জানান, বিজেপির সঙ্গে তাঁদের বন্ধুত্ব বহাল। তাঁরা এনডিএ-রও শরিক। ফলে বিরোধী আসনে বসার প্রশ্নই নেই। ২৭ আসন পেয়ে তাঁর দলই যে সরকার গড়ার দাবিদার, সে কথা রাজ্যপালকেও জানান জেলিয়াং।

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলে ‘সব কিছু ঠিক করতে’ আজ সকালেই জেলিয়াং দিল্লি চলে যান। কিন্তু দলের শীর্ষ স্তরের কোনও নেতাই তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি বলে বিজেপি সূত্রের খবর। রাজ্যের নেতাদেরও বলা হয়ছে, তাঁরা যেন এনপিএফ নেতাদের সঙ্গে কোনও বৈঠক না করেন। বিকেলে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব জানান, এনডিপিপির সঙ্গেই আছে বিজেপি। জেলিয়ংকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে অনুরোধ করেন তাঁরা। রাতে জেলিয়াঙের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের কথাও ঘোষণা করেছেন অসমের বিজেপি মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।

তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে মণিপুরে বিজেপি সরকার থেকে সরে আসার কথা ঘোষণা করেছে এনপিএফ। রাজ্য বিজেপি-রও অনেকেই ‘সুযোগসন্ধানী’ রিও-কে মুখ্যমন্ত্রী করতে নারাজ। এই অবস্থায় নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন অমিত। রিও-র বদলে মোনলুম কাইকনকে মুখ্যমন্ত্রী করে সরকার গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও খবর। রাজ্যে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ৮ তারিখ পর্যন্ত।

পরিস্থিতি সামলাতে রাতেই গুয়াহাটি পৌঁছেছেন অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কাল মেঘালয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান সেরে নাগাল্যান্ডে যাবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE