মেহবুবা মুফতি। ফাইল চিত্র।
অভিযোগ উঠেছে ‘ম্যাচ গড়াপেটা’ করে জোট ভাঙার। সেই অভিযোগ ঘোচানোর সুর গত কালই জম্মুর সভায় বেঁধে দিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। জম্মুর অনুন্নয়নের জন্য দায়ী করেছিলেন সদ্য-প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই জবাব দিলেন মেহবুবা। কিন্তু উল্টে বিপাকেও ফেলে দিলেন বিজেপিকে। টুইটারে পিডিপি নেত্রী প্রশ্ন তুললেন, জম্মুর প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ সত্যি হলে তাঁর জোট সরকারে থাকা বিজেপির কোনও মন্ত্রী এত দিন মুখ খোলেননি কেন?
বিরোধী শিবির গোড়া থেকেই বলছিল, নিজেদের ঘর গোছাতে লোক-দেখানো বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছে পিডিপি ও বিজেপি। জোট সরকারের ফলে কাশ্মীরে ভোটব্যাঙ্ক কমছিল পিডিপির, জম্মুতে বিজেপির। সেনা অভিযান যেমন মেহবুবার মাথাব্যথা ছিল, কাঠুয়া কাণ্ডে কড়াকড়ি তেমনই ভোগাচ্ছিল বিজেপিকে। আজ মেহবুবার বক্তব্য, ‘‘জোট-কর্মসূচিতেই পাকিস্তান ও হুরিয়তের সঙ্গে আলোচনা, পাথর ছোড়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, ৩৭০ ধারা নিয়ে স্থিতাবস্থার মতো বিষয়গুলি ছিল। বিজেপি নেতা রাম মাধব তার অন্যতম স্রষ্টা। আজ সেটিকেই ওঁরা ‘নরমপন্থা’ বলছেন!’’
ঘটনাচক্রে, আজ রেডিয়োয় ‘মন কি বাত’ বক্তৃতায় নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘হিংসা কোনও সমস্যা মেটাতে পারে না।’’ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের উদ্দেশেও। শ্যামাপ্রসাদকে সামনে রেখেই এখন জাতীয়বাদের তাস খেলতে চায় মোদীর দল। কাশ্মীরে তিনিই বিজেপির জাতীয়তাবাদের মুখ। গত কাল শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জম্মু গিয়েছিলেন অমিত। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম এমন বলছে, যেন আমরা জঙ্গি-দমন অভিযানে পুরোপুরি ঝাঁপাব বলেই জোট ভেঙেছি। ব্যাপারটা তা নয়। জম্মু-লাদাখে উন্নয়নই হয়নি। আমি জানি এই কথার কী জবাব আসবে।’’
জবাব তো মেহবুবা দিয়েছেন। কিন্তু তাতে বিজেপির বিড়ম্বনাই বেড়েছে। কারণ জম্মুর সিংহভাগ বিধায়কই বিজেপির। মেহবুবার দাবি, ‘‘জম্মু থেকে বিজেপির যাঁরা মন্ত্রী ছিলেন, তাঁদের কাজকর্ম পর্যালোচনা করুক বিজেপি। কারণ এর মানে দাঁড়ায়, এই মন্ত্রীরা গত তিন বছরে কেন্দ্র বা রাজ্যের কাছে বিষয়টি নিয়ে কিছুই বলেননি। উপত্যকায় বিশেষ নজর দরকার ছিল। তার মানে এই নয় যে, কোথাও উন্নয়ন কম হয়েছে।’’ মেহবুবা এ-ও বলেছেন, কাঠুয়ার ধর্ষকদের সমর্থন জানানো মন্ত্রীদের সরিয়ে দেওয়াটা তাঁর দায়িত্ব ছিল।
শুজাত বুখারি হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে গত কাল কাশ্মীরি সাংবাদিকদের ‘লক্ষ্মণরেখা’ মেনে চলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপির বিধায়ক চৌধরি লাল সিংহ। পিডিপির গত কালই লাল সিংহকে গ্রেফতারের দাবি জানায় রাজ্যপাল এন এন ভোরার কাছে। এফআইআর করার দাবি তুলেছেন পিডিএফ নেতা হাকিম ইয়াসিন। লাল সিংহের মন্তব্যের একযোগে নিন্দা করে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান উওমেন্স প্রেস কর্পস, প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া, প্রেস অ্যাসোসিয়েশন এবং ফেডারেশন অব প্রেস ক্লাবস অব ইন্ডিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy