ফাইল চিত্র
করোনার আতঙ্ক রয়েছে ঠিকই। কিন্তু খিদের সমস্যা তার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। এক দিন করোনার আতঙ্কে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা, অভাবের তাড়নায় তাঁদের অনেকেই এখন বাড়ি ছেড়ে কাজে ফিরতে মরিয়া।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নিজের এলাকা গোরক্ষপুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে দেওরিয়ার বাসস্ট্যান্ড থেকে শনিবার বাস ধরছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। দিবাকর প্রসাদ, খুরশিদ আনসারিরা গোরক্ষপুরে যাবেন। সেখান থেকেই মহারাষ্ট্র, গুজরাতে পৌঁছনোর বিশেষ ট্রেন ছাড়ছে। একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে খুরশিদ জানান, মুম্বইয়ে কাপড় সেলাইয়ের যে কারখানাটিতে তিনি কাজ করতেন, সেটি এখনও বন্ধ। এক মাস আগে তিনি উত্তরপ্রদেশে ফিরে এসেছিলেন, এখন আবার যাচ্ছেন কাজের সন্ধানে।
খুরশিদের কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশে কাজ পেলে আর ফিরতে চাইতাম না। আমার কারখানা আজও বন্ধ। তবে যে কোনও জায়গায় কাজের খোঁজে বাড়ি থেকে বেরোতে হয়েছে আমাকে। কারণ, খিদের চেয়ে করোনা ভাল।’’ তাঁর যুক্তি, খিদেয় সন্তানদের মৃত্যুর চেয়ে করোনায় তাঁর মৃত্যু হওয়া ভাল।
করোনার আতঙ্কে কর্মস্থল থেকে কয়েকমাস আগে থেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের প্রায় ৩০ লক্ষ শ্রমিক। এখন চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে তাঁদের অনেকেই আবার কাজের খোঁজে বাড়ি ছাড়ছেন। যেমন, দিবাকর। কলকাতার একটি সংস্থায় কাজ করেন তিনি। হোলির সময়ে বাড়ি এসে লকডাউনের কারণে উত্তরপ্রদেশেই আটকে ছিলেন। এই মুহূর্তে তাঁর কর্মস্থল খুলে গিয়েছে। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের কথা ভেবে তিনি কলকাতায় ফিরছেন। দিবাকর জানান, করোনার কথা ভেবে ভয় পাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু বাড়িতে আটকে থাকলে পরিবার চালানো সম্ভব হবে না।
যোগী সরকার অবশ্য দাবি করছে, ছোট শিল্পে ৬০ লক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। রোজগার নিশ্চয়তা প্রকল্পেও যোগ দিয়েছেন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ। তবে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সিদ্ধার্থ নগরের মহম্মদ আবিদের মতো কর্মীরা কিন্তু ফের রাজ্য ছেড়ে যেতে চাইছেন। মুম্বইয়ে ২০ বছর ধরে এসি সারাইয়ের কাজ করতেন আবিদ। তিনি বলেন, ‘‘মুম্বইয়ে রোজগার অনেক বেশি।...আর উত্তরপ্রদেশে যাঁর কাছেই যাবেন, শুনতে হবে, কাজ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy