ঝকঝকে ওয়েবসাইট। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ও ছাত্রদের সঙ্গে নেতা থেকে মন্ত্রী,
প্রাক্তন রাজ্যপাল, এমনকী অভিনেত্রীদের ছবি। সঙ্গে লেখা প্রতিশ্রুতি—সোনালি স্বপ্নের আশা। ক্যাম্পাসিং-এরও হাজারো আশ্বাস। আর সেই ফাঁদে পা দিয়েই ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হল মিজোরামের ৩২ জন ছাত্রছাত্রীর। মন্ত্রিত্ব খোয়ালেন মিজোরামের শ্রম ও নিয়োগ মন্ত্রী। চাকরি গেল যুব কমিশনের চেয়ারম্যানের। আর জলে গেল রাজ্য সরকারের ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা।
মিজোরামের শ্রম ও নিয়োগ দফতর সরকারি টাকায় ওই ছাত্রছাত্রীদের পাঠিয়েছিল কলকাতার সল্টলেকের ‘নালন্দা ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ’-এ (নিয়াস) পড়তে। কয়েক দিন আগে ওই ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের পর মিজোরাম সরকার জানতে পারে, কলকাতার ওই প্রতিষ্ঠানটির সব প্রতিশ্রুতিই ভুয়ো। পড়ুয়াদের অভিযোগ—সংস্থাটির অনুমোদনই নেই, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসও মিথ্যা! এই পরিস্থিতিতে ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন মিজোরামের শ্রম ও নিয়োগ মন্ত্রী লালরিনমওইয়া রালতে। সাসপেন্ড করা হল ওই দফতরের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিবকে।
ইস্তফা দিলেন মিজোরামের যুব কমিশনের চেয়ারম্যানও।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে মিজোরাম সরকারের উদ্যোগে কয়েকটি কলেজের ৩২ জন ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য কলকাতার সল্টলেকে, সেক্টর ফাইভের ‘নিয়াস’-এ হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে পাঠানো হয়। মিজো যুব কমিশনের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক টি সাংকুংগা ছাত্রদের বাছাই করেন। তৎকালীন শ্রম ও নিয়োগ দফতরের অধিকর্তা রোটলুয়াঙ্গা চুক্তি করেন কলকাতার ওই সংস্থার সঙ্গে। রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে নিয়াস-কে আগাম ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, কলকাতা যাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই তাঁরা বুঝতে পারেন, নিয়াসের সব প্রতিশ্রুতিই ভুয়ো। কোনও বড় সংস্থা নিয়োগের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানে যায় না। বিজ্ঞাপনে দেওয়া ‘আন্তর্জাতিক মানের’ গ্রন্থাগারে বই সাকুল্যে ৫০টি। নেই গবেষণাগার, সুইমিং পুল, জিম। ক্লাসও হয় অনিয়মিত। অধিকাংশ ক্লাস ঘরের এসি ও কম্পিউটার খারাপ। ছাত্রছাত্রীদের সংস্থার বিপণনের কাজে ঘুরতে হতো, বেচতে হতো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের টিকিট। পড়ুয়াদের অভিযোগ, সেখানকার শিক্ষক, এমনকী অধ্যক্ষর ডিগ্রিও ভুয়ো। পরে ছাত্ররা জানতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওই প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। একে একে সব ছাত্রছাত্রীই ফিরে যায় মিজোরামে।
গত সপ্তাহে প্রধান বিরোধী দল এমএনএফ শ্রমমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ দেখায়। সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন আইজলে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে চেয়ে স্মারকলিপি দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy