Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
National News

ভোট মিটতেই ‘কাকতাড়ুয়া’ মোদি-অমিত শাহ!

তবে জীবন্ত নয়। ফসল আগলাচ্ছে মোদি-অমিত শাহদের কাটআউট। সেই কাটআউট, যেগুলি মাস দু’য়েক আগেও ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছিল। শোভা পাচ্ছিল জনসভা থেকে রাস্তাঘাটে, পথে প্রান্তরে। কিন্তু ভোট মিটে গিয়েছে। তাই এখন আর সেগুলির প্রয়োজন নেই, কদরও নেই।

গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
চিকমাগালুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ১২:২৪
Share: Save:

কে বলে মোদী কৃষক দরদী নন? কেউ বলতে পারবে অমিত শাহ চাষিদের কথা ভাবেন না? কর্নাটকের চিকমাগালুরে গেলে অন্তত তেমনটা বলার ‘সাহস’ কেউ দেখাবেন না। কারণ সেখানে চাষের জমিতে মোদী-অমিত শাহদের উজ্জ্বল উপস্থিতি! রীতিমতো ‘দাঁড়িয়ে’ থেকে ফসল পাহারা দিচ্ছেন তাঁরা।

তবে জীবন্ত নয়। ফসল আগলাচ্ছে মোদি-অমিত শাহদের কাটআউট। সেই কাটআউট, যেগুলি মাস দুয়েক আগেও ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছিল। শোভা পাচ্ছিল জনসভা থেকে রাস্তাঘাটে, পথে প্রান্তরে। ভোট মিটে গিয়েছে। এখন আর সেগুলির প্রয়োজন নেই, কদরও নেই। কিন্তু চাষিদের কাছে সেগুলি তো ‘অমূল্য’ সম্পদ। বিশেষ করে কাকতাড়ুয়া হিসেবে।

কারণটা হয়তো লুকিয়ে আছে কাকতাড়ুয়া বানানোর পদ্ধতির মধ্যে। কী ভাবে তৈরি হয় এই কাকতাড়ুয়া?

আরও পড়ুন: ‘বুড়ো’দের ছেঁটে ফেললেন রাহুল, কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে নবীন মুখের সারি

দুটো লাঠি অনেকটা ‘ক্রস’ চিহ্নের মতো করে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয় প্রথমে। তার সঙ্গে কিছু খড়-বিচালি বেঁধে কিছুটা মোটা করা হয়। তারপর অনেকটা মানুষের মতো আকৃতি তৈরি করা হয়। এরপর পরিয়ে দেওয়া হয় ছেঁড়া জামা। পরনে কখনও একই রকম বাতিল পাজামা বা প্যান্ট পরানো হয় কখনও বা পরানো হয় না। সব শেষে মাথায় কালো হাঁড়ি বেঁধে ফসলের জমিতে পুঁতে দেওয়া হয়। পাখিরা ফসল খেতে জমিতে এলেই ওই কাকতাড়ুয়াকে মানুষ ভেবে ভয় পেয়ে অনেক সময় পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে অনাস্থা নিয়ে শুরু তোড়জোড়

তবে এই কাকতাড়ুয়াগুলির আকার-আকৃতি পুরোপুরি মানুষের মতো কখনওই হয় না। ফলে পাখিরাও যে সব সময় সেগুলিকে ভয় পায়,তা নয়। কিন্তু মোদী-অমিত শাহদের এই কাটআউটগুলি তো এক্কেবারে ‘জীবন্ত’। অবিকল মানুষের মতো। তাই মানুষ মনে করে পক্ষীকূলের ভুল করা খুবই স্বাভাবিক। আর এই কারণেই সাধারণ কাকতাড়ুয়ার চেয়ে এগুলি অনেক বেশি কার্যকরী, মত চাষিদের। তাছাড়া কাকতাড়ুয়া বানাতে সময় এবং পরিশ্রম আছে। আর এগুলি তো রেডিমেড। তাই মোদী থেকে শাহ— যে যাঁকে পেয়েছেন লুফে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: রাহুলকে তির, মায়া ছাঁটলেন নেতাকে

মাস দুয়েক আগেই কর্নাটক বিধানসভার ভোট হয়েছে। কংগ্রেস-জেডিএস ভোট পরবর্তী জোট করায় ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও বিজেপি প্রায় ম্যাজিক ফিগারের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। আর চিকমাগালুর জেলার পাঁচটি আসনেই পদ্ম ফুটেছে। ভোটের আগে মোদী-অমিত শাহ সেখানে বেশ কয়েকটি নির্বাচনী জনসভা করেন। তাতে এই ধরনের প্রচুর কাটআউট ব্যবহার করা হয়েছিল। এখন সেগুলিই শোভা পাচ্ছে চাষিদের জমিতে, কাকতাড়ুয়া হয়ে।এ-ও যেন এক ‘মোদী ম্যাজিক’।

চিকমাগালুরের তারিকেরে গ্রামে চাষের সামগ্রী বিক্রির ব্যবসা রয়েছে রাজেশ মাতাপাতির। তিনি জানালেন, ‘‘এক সময় ভোট-ভিক্ষায় এই কাটআউটগুলি বসিয়েছিল বিজেপি। এখন সেগুলিই চাষিরা জমিতে বসিয়ে দিয়েছেন।’’ তাই বুলবুলিতে ধান খাওয়ার উপায় নেই।যখন মাঠে মাঠে এত কাটআউট যে না দেখে উপায় নেই, তখন লাক্কাবল্লি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সভাপতি টি এন শ্রীনিবাসনের চোখে-মুখে অপার বিস্ময়, ‘‘তাই নাকি? কই, কোথাও দেখিনি তো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE