হাঙ্গামা থেমেছে। কমছে না উত্তেজনা ও উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে মহম্মদ আলি জিন্নার ছবি রাখা নিয়ে বিতর্কে ইন্ধন জোগানোও বন্ধ করা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পূর্ত দফতরের অতিথিশালায় ছবি বদল নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ অহমদ খানের ছবি সরিয়ে টাঙানো হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর ছবি। কে তা করেছেন, জানা যায়নি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজক ভিডিয়ো ও বার্তা ছড়ানোর অভিযোগে রবিবার রাতে অমিত গোস্বামী ও যোগেশ বার্ষ্ণেয় নামে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। এমনই একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাব-এ-সৈয়দ গেটে জড়ো হয়ে আজাদির স্লোগান তুলছে এক দল তরুণ। দাবি করা হচ্ছে, এরা আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ভিডিয়োটি গত শুক্রবারের। এটির সত্যাসত্য যাচাই না করে এ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ পুলিশ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের উপাধ্যক্ষ সজ্জাদ সুবানের দাবি, ওখানে ভারত থেকে নয় আরএসএস থেকে মুক্তি (আজাদি)-র স্লোগান দেওয়া হয়েছিল।
গত বুধবারের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। উপাচার্য তারিক মনসুর ঘোষণা করেছেন সে দিনের হাঙ্গামায় স্থগিত হওয়া পরীক্ষা ১২ তারিখ থেকে শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি বজায় রাখতে গড়া হয়েছে ১৬ সদস্যের সমন্বয় কমিটি। গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগ নিয়ে আজ দিল্লিতে সরব হন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা। তাঁরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান এ নিয়ে।
আরও পড়ুন: আপনার ওই মালাটা চাই, আবদার রাখলেন মোদীও
জিন্নার ছবি নিয়ে তরজাটা শুরুটা করেছিলেন আলিগড়ের বিজেপি সাংসদ সতীশ গৌতম। তাঁর বক্তব্য, দেশকে তিন টুকরো করার পিছনে যিনি, এখনও কেন তাঁর ছবি ঝুলবে বিশ্ববিদ্যালয়ে! এর পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, ভি কে সিংহেরা দেশভক্তি ও শান্তিরক্ষার নামে, কিংবা মানুষের ভাবাবেগকে মর্যাদা দেওয়ার কথা তুলে পরোক্ষে জিন্নার ছবি সরানোর পক্ষেই সওয়াল করেছেন। এরই মধ্যে ভারতে আশ্রিত তসলিমা নাসরিন টুইট করেছেন, ‘‘বাংলাদেশে শিক্ষা মহলে কখনও জিন্নাকে সম্মান করা হত না। কারণ, অধিকাংশ মানুষ বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও উর্দুকে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের একমাত্র সরকারি ভাষা ঘোষণা করেছিলেন।’’ এই সূত্রে তসলিমা উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে জিন্না হলের নাম বদলে সূর্য সেন হল ও জিন্না অ্যাভেনিউয়ের নাম পাল্টে বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউ করা হয়েছিল।
জিন্নার ছবি রাখার প্রশ্নে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নেতা সজ্জাদ আজ বলেন, ‘‘ছবিটা ১৯৩৮ সাল থেকেই রয়েছে। এটা ‘হেরিটেজ’। এটা দেখলে স্বাধীনতার আগের অখণ্ড ভারতের কথা মনে পড়ে। আশা জাগে, এক দিন পাকিস্তান আবার ভারতের সঙ্গে মিশে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy