রাহুল গাঁধীকে সামনে পেয়ে একের পর এক প্রশ্নে বিঁধতে চেয়েছিলেন এক বাঙালি লেখক। শান্ত গলায় সব ক’টির জবাব দিয়েছিলেন রাহুল। তার পর বলেছিলেন, ‘‘এ ভাবে আমাকেই জেরা করতে পারবেন, কিন্তু নরেন্দ্র মোদীকে পারবেন না।’’
তিন মাস আগে রাহুলের সিঙ্গাপুর সফরের ঘটনা। রাহুলের পথ ধরে গত কাল সেই সিঙ্গাপুরেই শ্রোতাদের থেকে সরাসরি প্রশ্ন নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু কংগ্রেস বলছে, রাহুলের নকল করতে গিয়েও ‘ধরা’ পড়ে গেলেন মোদী। রাহুলের আলাপচারিতা ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। আর মোদীর সভা গোটাটাই সাজানো। লোক দেখানো। সিঙ্গাপুরে মোদীর সঙ্গে আলাপচারিতার আসর বসেছিল নানইয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রশ্ন আসছিল ইংরেজিতে। মোদী জবাব দিচ্ছিলেন হিন্দিতে। ইংরেজিতে তা অনুবাদ করছিলেন আর একজন।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হল, উদ্ভাবনের মাধ্যমে এশিয়ার রূপান্তর কী করে সম্ভব হবে? হিন্দিতে মোদীর জবাব, ‘‘গোটা বিশ্ব নিশ্চিত, একুশ শতকটা এশিয়ার। কিন্তু আমরা এশিয়াবাসীরাই সেটি অনুভব করি না। আমরা এখনও দুনিয়ার অন্য ভূখণ্ডের দ্বারা এতটাই প্রভাবিত, যে আমাদের মনেই হয় না, এ বারে আমাদের পালা। আমাদেরও মনে করতে হবে, আমরাও কিছু করতে পারি।’’
এ বার পালা অনুবাদকের। তাঁর কাজ ছিল মোদীর কথাটুকু শুধু ইংরেজিতে অনুবাদ করে দেওয়া। সেটাই করতে গিয়ে অনুবাদক গড়গড় করে পড়ে ফেলেন অনেক কিছু। বলেন চিন, জাপানের ভূমিকার কথাও, মোদী যা আদৌ বলেননি। কৃষি, চাকরি, জল, দূষণ, নগরায়ণ, জলবায়ু বদলের মতো অভিন্ন সমস্যার কথাও বললেন, যেগুলি হয়তো প্রশ্নের জবাবে মোদীর বলার কথা ছিল। কিন্তু বলেননি বা বলতে ভুলে গিয়েছেন।
কংগ্রেসের নেতাদের বক্তব্য, এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট, গোটা আলাপচারিতাটিই সাজানো। তিন মাস আগে রাহুল গাঁধী এ ভাবে কোনও প্রশ্ন সাজাননি। খোলাখুলি যা প্রশ্ন এসেছিল, তারই জবাব দিয়েছেন। জেরার মুখেও হেসে উত্তর দিয়েছেন। কিন্তু রাহুলকে নকল করতে গিয়েও সেই সাহস দেখাতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী। দেশের মাটিতে গত চার বছরে একটিও খোলাখুলি সাংবাদিক বৈঠক করেননি। যে ক’টি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সেগুলিও সাজানো ছিল। বিদেশের মাটিতেও ঘটল তেমনটাই। তাতেই দেখা গেল, মোদী যত বলেন, অনুবাদ বলে তার শতগুণ! তাঁর এই ‘সাজানো’ সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো প্রচার করছে কংগ্রেস। বিজেপি চুপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy