উদ্বোধন: মন্দিরের ফিতে কাটছেন মহম্মদ মনসুর আনসারি। মঙ্গলবার গয়ায়। নিজস্ব চিত্র
গ্রামের সামান্য কয়েক ঘর হিন্দু পরিবারের জন্য মন্দির তৈরি করে দিলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা। বিহারের গয়া জেলার বুধপুর গ্রামে নিজেরাই জমি দিয়েছেন তাঁরা। মন্দিরের উদ্বোধনে হিন্দু প্রতিবেশীরা ফিতে কাটার জন্য বেছে নিয়েছেন এই প্রয়াসের প্রধান উদ্যোক্তা মহম্মদ মনসুর আনসারিকেই। আগামীকাল মন্দিরের দ্বারোদ্বঘাটন যজ্ঞেও সামিল হবেন তাঁরা। গয়া শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামের নাম এখন জেলার মানুষের মুখে মুখে।
বুধপুর গ্রামটিতে শ’খানেক পরিবারের বাস। তাঁদের মধ্যে মাত্র ১০টি পরিবার হিন্দু। বাকিরা মুসলিম। দেশের আর পাঁচটা গ্রামের মতোই সেখানেও মিলেমিশেই বাস করেন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। পরস্পরের সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন। কোনও ভেদাভেদই ছুঁতে পারেনি বুধপুরের মানুষকে। গ্রামের হিন্দুরা একটি জায়গায় অস্থায়ী ভাবে পুজো-অর্চনা করতেন। স্থায়ী মন্দির তৈরির সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না। এই পরিস্থতিতে হিন্দুদের পাশে এসে দাঁড়ান মহম্মদ মনসুর আনসারি। নিজের আড়াই কাঠা জমি মন্দিরের নামে দান করেন তিনি।
দাদার জমি দানের কথা জানতে পেরে তাঁর খুড়তুতো ভাই মুখতার আলম ওই জায়গায় স্থায়ী মন্দির তৈরির জন্য সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দান করেন। দুই ভাইয়ের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রামের অন্য পরিবারগুলি যে যাঁর সাধ্যমতো সাহায্য করেন। আগামীকাল মন্দিরের দ্বারোদ্বঘাটন যজ্ঞে হাজির থাকবেন স্বামী রামানুজাচার্য মহারাজ।
গ্রামের বাসিন্দা উমেশ মাঝি, রাজকুমার সাহু, কৈলাশ যাদবরা বলেন, ‘‘মনসুর ভাইরা না থাকলে গ্রামে মন্দির তৈরি সম্ভব ছিল না। আগে উৎসব-অনুষ্ঠানে পাশের গ্রামে যেতাম। এখন পুজোআচ্চা গ্রামেই হবে।’’ মনসুরের বক্তব্য, ‘‘ভগবান আর আল্লায় আমি কোনও ফারাক দেখি না। আসলে ইসলামই অন্য ধর্মকে সম্মান করতে শিখিয়েছে।’’ সব দেখেশুনে স্থানীয় ঘাটেরা পঞ্চায়েতের প্রধান রণবিজয় দাস বলেন, ‘‘এটা শুধুই মন্দির নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ইতিহাস তৈরি হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy