Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

যুবকদের টানতে তৎপর চন্দ্রবাবু

বছর ঘুরলেই রাজ্যে এক সঙ্গে লোকসভা-বিধানসভা নির্বাচন। তাই বেকার যুবকদের ক্ষোভ-অসন্তোষকে চাপা দিয়ে, তাদের পাশে পেতে মাঠে নেমে পড়লেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। গাঁধী জয়ন্তীর দিন চালু করলেন ‘মুখ্যমন্ত্রী যুবনেস্তাম পরিকল্পনা’। যে পরিকল্পনায় রাজ্যের প্রায় ১০ লক্ষ বেকার যুবককে এক হাজার টাকা করে ভাতা দেবে সরকার। তিন বছর ধরে তাঁরা ওই টাকা পাবেন।

বিজওয়াড়ার অনুষ্ঠানে চন্দ্রবাবু নায়ডু। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

বিজওয়াড়ার অনুষ্ঠানে চন্দ্রবাবু নায়ডু। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
বিজয়ওয়াড়া শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:০৬
Share: Save:

বছর ঘুরলেই রাজ্যে এক সঙ্গে লোকসভা-বিধানসভা নির্বাচন। তাই বেকার যুবকদের ক্ষোভ-অসন্তোষকে চাপা দিয়ে, তাদের পাশে পেতে মাঠে নেমে পড়লেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। গাঁধী জয়ন্তীর দিন চালু করলেন ‘মুখ্যমন্ত্রী যুবনেস্তাম পরিকল্পনা’। যে পরিকল্পনায় রাজ্যের প্রায় ১০ লক্ষ বেকার যুবককে এক হাজার টাকা করে ভাতা দেবে সরকার। তিন বছর ধরে তাঁরা ওই টাকা পাবেন।

তেলঙ্গানা ভাগ হওয়ায় হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে হায়দরাবাদ। অবিভিক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে পরিষেবা ক্ষেত্র থেকে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বছরে দুই থেকে আড়াই লক্ষ নতুন চাকরি একাই জোগাত নিজামের শহর। সেই হায়দরাবাদ তেলঙ্গানায় পড়ে যাওয়ায় রাজ্যের অর্থনীতি বড় ধাক্কা খেয়েছে বলে আক্ষেপ করছিলেন রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি সচিব রামাজানেল্লু। একই সুরে আজকের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে চেক নিতে আসা বিটেক ছাত্রী পূজারও প্রশ্ন ছিল, নতুন রাজধানী অমরাবতী কবে হায়দরাবাদের ধাঁচে গড়ে উঠবে? মুখ্যমন্ত্রী নায়ডু বলেন, ‘‘হায়দরাবাদে ধীরে ধীরে তথ্য-প্রযুক্তির একটি ইকোসিস্টেম তৈরি হয়েছে। যা হতে সময় লেগেছে। অমরাবতীকেও সে ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে।’’

আসলে ২০১৯ সালে দ্বিমুখী যুদ্ধে নামছেন চন্দ্রবাবু। এক দিকে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা। অন্য দিকে, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে যত বেশি সম্ভব আসন জিতে কেন্দ্রে সরকার বানানোর দাবিদার থাকার চেষ্টা। সে কারণেই বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বিশেষ মর্যাদার দাবিতে ভোটের প্রায় এক বছর আগেই এনডিএ থেকে সরে এসেছে তাঁর দল তেলুগু দেশম। কিন্তু রাজ্যের যুব শক্তি যদি পিছনে না দাঁড়ায়, তা হলে স্বপ্ন যে ভাল ভাবেই ধাক্কা খাবে তা বুঝতে পারছেন তিনি। আর তাই গত ভোটের সময় আশ্বাস দেওয়া বেকার ভাতা কর্মসূচি প্রকল্প রূপায়ণে দেরি করতে চাইছেন না চন্দ্রবাবু। দল চাইছে আগামী ছ’মাসে অন্তত চার থেকে পাঁচ লক্ষ বেকার যুবককে ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে। যুবমানসে বার্তা দিতে আজকের অনুষ্ঠানে আগাগোড়া ছেলে তথা রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী নারা লোকেশকে পাশে বসিয়ে রাখেন নায়ডু। চুপ করে বসে নেই বিজেপিও। গত সাড়ে চার বছরে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ধীরে ধীরে সরব হতে শুরু করেছে তারা। চাকরি ও রোজগার তৈরিতে নতুন সরকার যে ব্যর্থ, এনডিএ শিবির থেকে টিডিপি বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বিরোধী শিবিরের আরও অভিযোগ, টাকা দিয়ে ভোট কিনছে সরকার।

যে যুবকেরা অটোমোবাইল, প্রিন্টিং, হসপিট্যালিটি ম্যানেজমেন্ট, আইটি-র মতো ক্ষেত্রে স্কিল ভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিতে চান, তাঁদের প্রশিক্ষণের খরচও রাজ্য সরকার দেবে বলে আজ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ক্ষেত্রের ২৪টি সংস্থা ওই বেকার যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। সঠিক ভাবে প্রশিক্ষণ নিতে পারলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ওই শিক্ষানবিশকে নিজেদের সংস্থায় কাজ দেওয়ার বিষয়ে সরকারকে আশ্বাসও দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE