Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Congress

কংগ্রেসের নবীন ব্রিগেডের উপরেই নজর মোদী-শাহের

সচিন পাইলট, জিতিন প্রসাদ, মিলিন্দ দেওরা, কুলদীপ বিশনোই, আর পি এন সিংহের মতো নেতারা ভাবতে পারেন, দলে তাঁদের ভবিষ্যৎ নেই।

ভোপালের দফতরে খোলা হচ্ছে সিন্ধিয়ার নামফলক। ছবি: পিটিআই

ভোপালের দফতরে খোলা হচ্ছে সিন্ধিয়ার নামফলক। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৩:৪০
Share: Save:

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। এ বার কংগ্রেসের নবীন নেতাদের দলে টানতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল বিজেপি। দলের দফতরে দাঁড়িয়ে বিজেপির নেতা শাহনাওয়াজ হুসেন আজ জানিয়ে দিয়েছেন, সচিন পাইলটের মতো কংগ্রেসের যে সব নবীন নেতা তাঁদের দলকে নিয়ে হতাশ, হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষা করছে বিজেপি।

রাহুল গাঁধী কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পরে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতেন জ্যোতিরাদিত্য। এক সময়ে লোকসভা চলাকালীন রাহুলের পাশে বসে, দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলতে দেখা যেত তাঁকে। অনেক সময়ে রাহুল চুপ করে থাকলেও নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হতেন সিন্ধিয়া। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে হারের পরে দলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল। চেয়েছিলেন, কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতারাও পদ থেকে ইস্তফা দিন। সে পথে অবশ্য হাঁটেননি প্রবীণ নেতাদের কেউই। বরং রাহুলই ধীরে ধীরে নবীন প্রজন্মের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। নবীনেরা ওয়ার্কিং কমিটি নতুন করে গড়ার দাবি করেছেন, চেয়েছেন পূর্ণ সময়ের সভাপতি— কিন্তু সে সবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি আজও। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘দলের সভাপতি পদ নিয়ে ধোঁয়াশা চলছেই। পরিস্থিতি বদলের জন্য পদক্ষেপ করছেন না রাহুল। সচিন পাইলট, জিতিন প্রসাদ, মিলিন্দ দেওরা, কুলদীপ বিশনোই, আর পি এন সিংহের মতো নেতারা ভাবতে পারেন, দলে তাঁদের ভবিষ্যৎ নেই। আর মনে হয়, নিজের অস্তিত্ব বাঁচাতেই ঝাঁপ দিলেন সিন্ধিয়া।’’

বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতার ব্যাখ্যা, মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে চম্বল এলাকায় ভাল ফল করেছিল কংগ্রেস। সেই কৃতিত্ব অনেকটাই জ্যোতিরাদিত্যের। তিনি আশা করেছিলেন, দল তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করবে। তা তো হলই না, রাজস্থানে সচিন পাইলটকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হলেও মধ্যপ্রদেশে সিন্ধিয়ার জন্য শিঁকে ছিঁড়ল না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও করা হল না তাঁকে। রাহুল তাঁকে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দিলেন। কিন্তু দেখা গেল, অলিখিত ভাবে গোটা উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব কব্জা করে নিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। আর সিন্ধিয়াকে কোণঠাসা করতে মাঠে নেমে পড়লেন মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের তিন নেতা— কমল নাথ, দিগ্বিজয় সিংহ ও সুরেশ পচৌরি। সিন্ধিয়া বললেন, তিনি রাজ্যে কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে পথে নামবেন। কমল নাথ সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া দিলেন— ‘নামতে হলে নামুন’। ওই নেতার মতে, কংগ্রেসে এই চাপের কারণেই রাস্তা খুঁজতে হয়েছে জ্যোতিরাদিত্যকে। একই অবস্থা কংগ্রেসের নবীন প্রজন্মের অনেকেরই— দাবি করছেন বিজেপি নেতারা। সূত্রের খবর, এই নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন সিন্ধিয়াও।

জ্যোতিরাদিত্যের ইস্তফা নিয়ে মুখ খুলেছেন কুলদীপ বিশনোই। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘এটা বড় ধাক্কা। দলের অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। তাঁকে দলে ধরে রাখতে নেতৃত্বের সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল। কংগ্রেসে তাঁর মতো অনেকে রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের কোণঠাসা মনে করছেন।’’

বিজেপির শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে বলছেন, রাহুল ব্রিগেডের নেতারা বিজেপিতে স্বাগত। অর্থাৎ, রাজ্যস্তরে কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটানোই শুধু নয়, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের নিশানায় এখন কংগ্রেসের নবীন প্রজন্ম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE