চলতি বছরে তিন বার বৈঠক হয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর। —ফাইল চিত্র।
গত এপ্রিলেই উহানের ঘরোয়া আলোচনায় ঠিক হয়েছিল, আফগানিস্তানের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের পুনর্গঠনে ভারত এবং চিন যৌথ ভাবে কাজ করবে। অবশেষে ছ’মাস পরে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হল। সম্প্রতি ১০ জন আফগান কূটনীতিককে ভারত ও চিন যৌথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে নয়াদিল্লিতে। সেই কর্মসূচির উদ্বোধন করে ভারতে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত লুও ঝাউনি জানান, কাবুলে দু’দেশের সহযোগিতার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরে তিন বার বৈঠক হয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর। আগামী মাসে চতুর্থ বারের জন্য তাঁদের দেখা হতে চলেছে আর্জেন্টিনায়। জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দেখা করবেন দুই রাষ্ট্রনেতা। চলতি প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদে মোদীর সঙ্গে এটাই শেষ সাক্ষাৎ শি-এর। ফলে ওই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত বছর চিন এবং ভারতের সম্পর্কের টালমাটাল পরিস্থিতি সামলে চলতি বছরে কিছুটা স্থিতিশীলতা আনা গিয়েছে বলে দাবি বিদেশ মন্ত্রকের। তার পরেও অবশ্য বেশ কয়েক বার সীমান্ত পেরিয়ে চিনা সেনার ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। অন্য বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক বিষয়েও জট কাটেনি। কিন্তু ডোকলামে যে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। সাউথ ব্লক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, ভূকৌশলগত কারণেই চিনের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখা প্রয়োজন। যদিও মোদী সরকারের এমন মনোভাবকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা।
মোদী-শি শীর্ষ বৈঠক ছাড়াও বছরের শেষ দু’মাসে দু’দেশের মধ্যে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে। এই সপ্তাহান্তে চিনের স্টেট কাউন্সিলার নয়াদিল্লি আসবেন। ডিসেম্বরে আসবেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। শীর্ষ পর্যায়ের মানবসম্পদ আদানপ্রদান নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রথম বৈঠকটি হবে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের।
এই প্রথম বার দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভারতকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে বেজিং। রাষ্ট্রদূত লুও ঝাউনি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান, মলদ্বীপের মতো রাষ্ট্রেও ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে একাধিক প্রকল্প গড়ে তুলতে উৎসাহী চিন। নভেম্বরে মোদী-শি বৈঠকে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচিত হবে বলেই চিনা দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে ভারতকে পাশে চেয়েছে বেজিং। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কূটনীতিতে চাপে থাকা চিনের পক্ষেও ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধংদেহি হওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy