Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘ঝাপ্পি’র পাল্টা কটাক্ষের জেরে বিতর্কে মোদী

বললেন, ‘‘জানতে চেয়েছিলাম, অনাস্থা আনার কারণ। পেলাম আলিঙ্গন! তাও অবাঞ্ছিত!’’

রাহুলের আলিঙ্গন নিয়ে রীতিমতো নাটকীয় ভঙ্গিতে সরব হলেন মোদী। ছবি:পিটিআই।

রাহুলের আলিঙ্গন নিয়ে রীতিমতো নাটকীয় ভঙ্গিতে সরব হলেন মোদী। ছবি:পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৭
Share: Save:

আলিঙ্গনে হতভম্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাহুলের ‘ঝাপ্পি’ নিয়ে গত কাল লোকসভায় টুঁ-শব্দটি করেননি। কিন্তু রাত পোহাতেই পাল্টে গেল ছবি। উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের এক সভায় রাহুলের আলিঙ্গন নিয়ে রীতিমতো নাটকীয় ভঙ্গিতে সরব হলেন মোদী। বললেন, ‘‘জানতে চেয়েছিলাম, অনাস্থা আনার কারণ। পেলাম আলিঙ্গন! তাও অবাঞ্ছিত!’’

আসলে রাহুলের আলিঙ্গনে অস্বস্তিতে বিজেপি। স্পিকার সুমিত্রা মহাজন গত কালই এ নিয়ে রাহুলকে সতর্ক করে দিলেও বিজেপি নেতাদের মুখ কার্যত বন্ধ। দলের মধ্যেই ফিসফাস— প্রধানমন্ত্রী যখন কথায় কথায় অন্য রাষ্ট্রপ্রধানদের আলিঙ্গন করেন, তখন কংগ্রেস সভাপতি কী এমন দোষ করলেন! ফলে বিজেপি রাহুলের রাফাল মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেও আলিঙ্গন প্রশ্নে নীরব।

তার মধ্যেই উল্টে বিতর্কের মুখে মোদী নিজে। আলিঙ্গনের পরে লোকসভায় রাহুলের চোখ টেপা নিয়ে মোদী যে ভাবে হাতের ইশারা করে দেখিয়েছেন, তা কতটা শালীন, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে। অনাস্থা প্রস্তাব এনে সনিয়া গাঁধী বলেছিলেন, কে বলেছে কংগ্রেসের কাছে সংখ্যা নেই। গত কাল সনিয়ার নাম না নিলেও তাঁর সেই মন্তব্যকে যে ভাবে মোদী কটাক্ষ করেছেন, তা-ও বিতর্কের মুখে। প্রশ্ন উঠেছে, রাহুলকে যদি আলিঙ্গন করা ও চোখ টেপার জন্য স্পিকার সতর্ক করতে পারেন, তা হলে সেই লোকসভার একজন সদস্য হিসেবে কেন ছাড় পাবেন মোদী? স্বভাবতই এ নিয়ে মুখ খোলেনি স্পিকারের দফতর এবং শাসক শিবির।

আলিঙ্গনের সেই মুহূর্ত।

লোকসভায় অনাস্থা আনা টিডিপি-র নেতা তথা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু আজ মোদীর কটাক্ষ নিয়েই সরব হয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য, ‘‘গত কাল লোকসভায় মোদী এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে মানায় না।’’ একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে দেশ যে অন্য ধরনের প্রতিক্রিয়া আশা করে, খাস রাজধানীতে দাঁড়িয়েই আজ তা স্পষ্ট করে দেন নায়ডু।

অনাস্থা ভোটে জয় এলেও রাহুলের ‘ঝাপ্পি’ যে কংগ্রসকে বাড়তি ফায়দা দিয়েছে, তা-ও বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই আজ উত্তরপ্রদেশের শাহারানপুরে কৃষক সভায় রাহুলের আলিঙ্গন নিয়ে মুখ খোলেন। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেন, ‘‘অনাস্থা কেন আনা হয়েছে, তা বিরোধীদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। পরিবর্তে পেলাম অবাঞ্ছিত আলিঙ্গন।’’

কিন্তু আলিঙ্গনে ক্ষতি কী— এই প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত বলেছেন, ‘‘বিদেশে গিয়ে সে দেশের রাষ্ট্রনায়কদের আলিঙ্গন করেন মোদী। সেগুলিও কি অবাঞ্ছিত?’’ প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্‌হা কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আলিঙ্গনপটু এখন আলিঙ্গনেই জব্দ!’’

রাফাল প্রশ্নে আজ রাহুলকে বিঁধেছেন অরুণ জেটলি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বক্তব্যে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকা উচিত। রাফাল নিয়ে রাহুল যা বলেছেন, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে তিনি প্রকৃত সত্য জানেন না।’’ যা দেখে কংগ্রেসের আইটি শাখার প্রধান দিব্যা রামাইয়া বলেন, ‘‘জেটলিজি, আপনারও আলিঙ্গন প্রয়োজন।’’ কংগ্রেস নেত্রীর ওই মন্তব্যে স্পষ্ট, আগামী দিনে বিজেপির বিরুদ্ধে আলিঙ্গনকে প্রচারের হাতিয়ার করার পরিকল্পনা নিচ্ছে কংগ্রেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE