Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

রিলায়্যান্সকে নিতেই হত, নয়া নথির দাবিতে রাফাল নিয়ে অস্বস্তিতে মোদী

রাফাল নিয়ে নথি প্রকাশে ফের অস্বস্তি বাড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকারের।

রাফাল নিয়ে নথি প্রকাশে ফের অস্বস্তি বাড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকারের।

সংবাদ সংস্থা
প্যারিস শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪৭
Share: Save:

কর্মী ইউনিয়নের সঙ্গে কর্তাদের বৈঠকের নির্যাস সংক্রান্ত দু’টি নথি। তাতেই ফের অস্বস্তি বাড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকারের। কারণ ওই নথি বলছে, ভারতকে রাফাল যুদ্ধবিমান বেচতে হলে অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর সঙ্গে জোট বাঁধতেই হত নির্মাতা সংস্থা ‘দাসো’-কে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র স্বার্থেই এই শর্ত বাধ্যতামূলক ছিল বলে দাসো-র দ্বিতীয় শীর্ষ কর্তা জানিয়েছিলেন ইউনিয়নকে।

উড়ান সংক্রান্ত ফরাসি ওয়েবসাইট ‘পোর্তেই আভিয়েসঁ’-তে প্রকাশিত হয়েছে ওই দু’টি বৈঠকের নথি। ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ আগেই দাবি করেছিলেন যে, রাফাল-চুক্তিতে রিলায়্যান্সকে ফ্রান্সের উপরে চাপিয়ে দিয়েছিল ভারত সরকার। যে সংবাদ সংস্থার কাছে তিনি এই দাবি করেছিলেন, সেই ‘মিডিয়াপার্ট’-ও বলেছিল, রিলায়্যান্স-বিতর্কের সমর্থনে প্রয়োজনীয় নথি আছে তাদের কাছে। অনেকের মতে, ফরাসি ব্লগে প্রকাশিত এই দু’টি নতুন নথির মধ্যে একটির কথাই বলেছিল তারা। বিবৃতিতে দাসো অবশ্য দাবি করেছিল, তাদের উপরে কোনও চাপ ছিল না। কিন্তু সেই দাবি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে এখন।

নথি বলছে, দাসো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ‘সিজিটি’ এবং ‘সিএফডিটি’ নামে দু’টি ইউনিয়নের বৈঠক হয়েছিল ২০১৭ সালের মে মাসে। ‘সিজিটি’-র সঙ্গে বৈঠকে দাসো-র সিওও লুইক সেগালেন বলেছিলেন, ‘‘আমাদের জন্য ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি ছিল। তাতে নাগপুরে দাসো-রিলায়্যান্স এরোস্পেস’ নামে সংস্থা তৈরির কথা বলা ছিল।’’ সেগালেন নাকি এ-ও বলেন যে, রাফাল রফতানির বরাত পেতে গেলে এই রফা-সূত্র মেনে নেওয়া জরুরি ও বাধ্যতামূলক ছিল তাঁদের কাছে।

ফ্রান্সের বৃহত্তম ইউনিয়ন-গোষ্ঠী সিএফডিটি-র সঙ্গে বৈঠকেও প্রায় একই যুক্তি দেন দাসো কর্তৃপক্ষ। বলেন, ভারতের ‘চাপিয়ে দেওয়া’ চুক্তির অবধারিত উদ্দেশ্য ছিল ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’। সেই কারণেই রিলায়্যান্সের সঙ্গে যৌথ-উদ্যোগে যুদ্ধবিমান তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। বাধ্যতামূলক ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ অংশটি ভারত সরকারই চুক্তির মধ্যে ঢুকিয়েছিল।’’ সরকারি ভাবে মিডিয়াপার্ট এ নিয়ে মুখ না-খুললেও তাদের অন্যতম সাংবাদিক অ্যান্টন রুগেট বলেন, ‘‘আমরা যা বলেছিলাম, তা-ই আরও প্রতিষ্ঠিত হল।’’ ওয়েবসাইটটি অবশ্য কোনও মন্তব্য না-করে পাঠকদেরই সত্যাসত্য বিচার করতে বলেছে।

রাফাল নিয়ে আজ এক প্রস্ত ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ি হয় কংগ্রেস-বিজেপির। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ফেসবুকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে খোঁচা দিয়ে লেখেন, ‘‘উনি নাকি এক বৈঠকে আমায় কিছু প্রশ্ন করেছিলেন। দিবাস্বপ্নের আমি কী উত্তর দেব? উনি কি মিথ্যে বলতে বলতে সেটাকেই সত্যি ভাবতে শুরু করেন, নাকি নিজেকে আরও ব্যঙ্গের পাত্র করে তোলেন ভাঁড়-রাজপুত্র?’’ এর উত্তরে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা টুইট করেন, ‘‘এক জন বিদূষক ফাঁকা আওয়াজ করে চলেছেন। ভারতের এক জন অর্থমন্ত্রী দরকার। কোনও খেপাটে ব্লগার নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE