Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দ্বিতীয় ইনিংসে চাপ বজায় রেখেই ভারত-পাক কথা 

কাল ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই ইমরান অভিনন্দন জানান মোদীকে। তাঁকে ধন্যবাদ জানান মোদী। পাক সংবাদমাধ্যমও মোদী সম্পর্কে নানা প্রশংসাবাক্য ব্যবহার করে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

আগামী মাসের ১৪ তারিখ কিরঘিজস্তানে সাংহাই কোঅপরেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর শীর্ষ বৈঠকে মুখোমুখি হতে চলেছেন ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। গত কয়েক মাসে পুলওয়ামা ও বালাকোটকে কেন্দ্র করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। তার পরে এসসিও-তে আলোচনায় বসবেন নরেন্দ্র মোদী ও ইমরান খান। তবে কূটনৈতিক সূত্রের মতে, সম্পর্ককে এক ঝটকায় স্বাভাবিক করে ফেলে আলোচনা শুরু হবে না। চাপ বজায় রাখা হবে ইসলামাবাদের উপর। স্থির হয়েছে, গত বারের মতো এ বার মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে ডাকা হবে না পাক প্রধানমন্ত্রীকে। তবে চাপ বজায় রেখেই কিছুটা যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা থাকবে সাউথ ব্লকের দিক থেকে।

কাল ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই ইমরান অভিনন্দন জানান মোদীকে। তাঁকে ধন্যবাদ জানান মোদী। পাক সংবাদমাধ্যমও মোদী সম্পর্কে নানা প্রশংসাবাক্য ব্যবহার করে। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে এই সৌহার্দ্য বিনিময় নজর এড়ায়নি আর এক প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিনের। শুক্রবার চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং বলেন, ‘‘এই শুভেচ্ছা বিনিময়কে স্বাগত জানাচ্ছি। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখতে এই দুই রাষ্ট্রের সমঝোতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’

ভোটের ফল ঘোষণার আগের দিনই এসসিও বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনে সৌজন্য বিনিময় করেন ভারত ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী। তারও আগে ইমরান আগ বাড়িয়ে জানিয়েছিলেন যে মোদী ফের প্রধানমন্ত্রী হলে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের পক্ষে তা ভাল হবে। সব মিলিয়ে বিজেপির মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদী এবং দক্ষিণপন্থী একটি দল ভারতে ক্ষমতায় থাকলে তা পাকিস্তানের জন্য সুবিধাজনক বলেই মনে করেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ভারতেও ভোটের সময় জাতীয়তাবাদ জাগিয়ে তোলার খাতিরে পাকিস্তানের সঙ্গে ‘রণং দেহি’ মনোভাব দেখান মোদী। এখন আর সেই প্রয়োজন নেই। বরং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ফেরাতে ভারত যে অগ্রণী ভূমিকানিচ্ছে, সেই বার্তা দেওয়াই প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাকিস্তানের মোল্লাতন্ত্র-রাজনৈতিক নেতৃত্ব-সেনা-আইএসআই-এর চক্রটি ভারতের উগ্র হিন্দুত্বের তেলে চলে ভাল! ইতিহাসও তেমনই বলছে। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের সব থেকে কাছাকাছি চলে এসেছিল ভারত ও পাকিস্তান ২০০১ সালে আগরা সম্মেলনে। পাকিস্তানের নেতৃত্বে সে দিন ছিলেন সামরিক প্রধান পারভেজ মুশারফ এবং ভারতের কান্ডারি অটলবিহারী বাজপেয়ী। কার্গিল যুদ্ধ ঘটিয়ে দেশের জাতীয়তাবোধকে জাগ্রত করাটাও বাজপেয়ী-মুশারফের রাষ্ট্রনীতির মধ্যেই ছিল।

ইমরান খান এবং সে দেশের সেনাপ্রধান চাইছেন, নিজেদের অনেক ভারত-বিরোধী কৌশলগত পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক স্তরে মান্যতা দিতে। ভারতে হিন্দুত্ববাদী সরকার থাকলে সেটা সুবিধা। এই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ইনিংসে পাক নীতি নিয়ে কী ভাবে এগোন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এ বার সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে আন্তর্জাতিক শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE