Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকা নিয়েই সরব মোদী

রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে আজ নরেন্দ্র মোদীর প্রশ্ন, ‘‘আর কত দিন ভারতকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সিদ্ধান্তগ্রহণকারী পরিষদের বাইরে রাখা হবে? ভারতবাসী দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। এ বার প্রয়োজন রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের।’’

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

অতিমারি কবলিত বিশ্বে রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকা নিয়ে জোরালো প্রশ্ন তুললেন। কিন্তু আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৫তম অধিবেশনে দেওয়া ভিডিয়ো বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নীরব থাকলেন দোরগোড়ার বিপদ চিনা আগ্রাসন নিয়ে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে আজ নরেন্দ্র মোদীর প্রশ্ন, ‘‘আর কত দিন ভারতকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সিদ্ধান্তগ্রহণকারী পরিষদের বাইরে রাখা হবে? ভারতবাসী দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। এ বার প্রয়োজন রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের।’’

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আজকের এই বিশ্বমঞ্চে কিছুটা আক্রমণাত্মক স্বরে ভারতের অধিকারের প্রশ্নটিকে সামনে নিয়ে এসে ঘরোয়া রাজনীতিতেও হাওয়া গরম করলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা এবং কোভিড মোকাবিলার প্রশ্নে তাঁর সরকারের খতিয়ানকে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরে বললেন, “জনকল্যাণ থেকে জগৎকল্যাণ এখন আমাদের রাস্তা।’’ বসুধৈব কুটুম্বকম যে ভারতের মন্ত্র তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ভারত গোটা বিশ্বকে নিজের পরিবার হিসেবে ভাবে। প্রতিবেশীরা অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। ভারতে যে ভ্যাকসিন তৈরি হবে তা গোটা মানবজাতির জন্য কার্যত উৎসর্গ করে বললেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে ভারতে তৈরি ভ্যাকসিন গোটা মানবতার লড়াইয়ে সহায়ক হয়ে উঠবে।’’ তাঁর সরকারের ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর প্রকল্পের ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন যে রূপান্তরকামীদের অধিকারও আইনের মাধ্যমে তাঁর সরকার সুরক্ষিত করেছে। কিন্তু দেশের আপৎকালীন মহাবিপদ নিয়ে কোনও শব্দ খরচ করতে দেখা গেল না তাঁকে। কৌশলে কিছুটা বার্তা দিলেন মাত্র। একই ভাবে পাকিস্তানের উল্লেখ না করে সার্বিক ভাবে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করেছেন মোদী।

তাঁর কথায়, “গত আট- ন’মাস ধরে গোটা বিশ্ব অতিমারির সঙ্গে লড়াই করছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ কোথায় এই কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাশে এসে দাঁড়াল? কোথায় কাজে লাগার মতো কোনও পদক্ষেপ?” এই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “এখন যেটা প্রয়োজন সেটা হল রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিক্রিয়া, সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি এবং চরিত্রের সংস্কার। এটা তো ঘটনা যে ভারতে রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ে যে আস্থা এবং এবং সম্মান রয়েছে তা অতুলনীয়। কিন্তু এটাও সত্য যে ভারতের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের জন্য। ভারতবাসী উদ্বিগ্ন যে কখনও কি এই সংস্কারের যুক্তিগ্রাহ্য পরিসমাপ্তি ঘটবে? আর কত দিন ভারতকে এই সংস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিকাঠামোর বাইরে রাখা হবে?” রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে ভারতীয় সেনার যোগদানের কথাও তুলে ধরেছেন মোদী।

আরও পড়ুন: ‘সাত দশকে পাকিস্তানের গৌরব সন্ত্রাস, মৌলবাদ’

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, যে সংস্থাটিতে সংস্কারের জন্য আজ জোরালো সওয়াল করলেন মোদী, সেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদকে কাজে লাগিয়ে এর আগে বারবার ভারতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রস্তাব গ্রহণের চেষ্টা করেছে বেজিং। চিনের সঙ্গে সামরিক এবং কূটনৈতিক দর কষাকষি এখনও মাঝপথে এবং পরিস্থিতি যথেষ্ট সংঘাতপূর্ণ ও স্পর্শকাতর। এমতাবস্থায় বিশ্বকে নিজের সঙ্গে নেওয়ার জন্য পৃথক ভাবে প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হলেও, রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে খোলাখুলি ভাবে চিনের বিরুদ্ধে তোপ দাগা, কূটনৈতিক কাণ্ডজ্ঞানের অভাব হিসেবেই গণ্য হবে।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “কোনও দেশের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর অর্থ এই নয় যে আমরা অন্য দেশের প্রতি বৈরী মনোভাব নিচ্ছি।’’ চিনকে কৌশলে বার্তা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, “আমরা কোনও দেশের সঙ্গে যখন উন্নয়নে শরিক হই, তখন এই উদ্দেশ্য নিয়ে নয় যে সে দেশটি আমাদের উপরে অসহায় ভাবে নির্ভর করুক। নিজেদের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে আমরা কখনও পিছপা হই না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi United Nations
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE