Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

‘‘আমরা ভুল করছি আর সংবাদমাধ্যমের হাতে ‘মশলা’ তুলে দিচ্ছি”, বকুনি মোদীর

গত বছর এপ্রিলে দলীয় সম্মেলনেও মোদী নেতাদের বলেছিলেন, ‘‘চুপ করে থাকা অভ্যাস করুন।’’ এ বার কাঠুয়া এবং উন্নাওয়ে ধর্ষণ-খুন নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতে ফের মোদীর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৪
Share: Save:

দলের নেতাদের ‘কুকথা’-র তোড়ে ব্যতিব্যস্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

কখনও সন্ত্রাস, কখনও ধর্ষণের ঘটনা, কখনও আবার মহাভারত থেকে ডারউইনের তত্ত্ব— গত ছ’মাসে মোদীর মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কদের মুখনিঃসৃত বাক্য পরপর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আজ নিজের অ্যাপ-এর (নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ) মাধ্যমে সারা দেশে বিজেপি নেতাদের আবার সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী। বোঝালেন, ওই সব দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে তাঁদের তো বটেই, নষ্ট হচ্ছে বিজেপির ভাবমূর্তিও।

দলের নেতাদের মোদী বলেছেন, সংবাদমাধ্যম বাড়াবাড়ি করছে বলে তাদের সব সময় দুষে লাভ নেই। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা ভুল করছি আর সংবাদমাধ্যমের হাতে ‘মশলা’ তুলে দিচ্ছি। ক্যামেরা দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে কথা বলছি, যেন আমরা কোনও বিরাট সমাজবিজ্ঞানী অথবা বিশ্লেষক। প্রকৃত তথ্য না জেনে করা সেই সব মন্তব্যকে ব্যঙ্গ করছে সংবাদমাধ্যম। এতে সংবাদমাধ্যমের দোষ নেই।’’ এক ঘণ্টার কথাবার্তায় তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকে যদি মতামত দিতে শুরু করেন, তা হলে মূল বিষয়টা থেকে নজর সরে যায়। উত্তর দেওয়ার জন্য উপযুক্ত লোক আছে।’’

প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন! তার বেলা?

• আরও অনেক মোহনলাল কর্মচন্দ গাঁধীকে প্রয়োজন। পটনার অনুষ্ঠানে

• মহাভারতে বলে, কর্ণ মায়ের গর্ভে জন্মাননি। তার অর্থ, তখন জিন-বিজ্ঞান কত উন্নত ছিল। আর গণেশকে দেখেই বোঝা যায় প্লাস্টিক সার্জারিও ছিল। মানুষের দেহে হাতির মাথা বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

২০১৪ সালে মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে

গত বছর এপ্রিলে দলীয় সম্মেলনেও মোদী নেতাদের বলেছিলেন, ‘‘চুপ করে থাকা অভ্যাস করুন।’’ এ বার কাঠুয়া এবং উন্নাওয়ে ধর্ষণ-খুন নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতে ফের মোদীর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও আজ তিনি যখন সতর্ক করছেন, তখনই তাঁর মন্ত্রিসভার প্রতিমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার বলেছেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা (ধর্ষণ) দুর্ভাগ্যজনক। কখনও কখনও থামানো যায় না। এত হইচইয়ের কী আছে?’’

মোদী যে ধরনের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, তার নমুনা মিলেছে মধ্যপ্রদেশের বালিয়ার সাংসদ ভরত সিংহের মন্তব্যেও। তিনি গত কাল বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করেন খ্রিস্টান মিশনারিরা। এই সব মিশনারির নির্দেশে কাজ করেন সনিয়া গাঁধী। দেশের ঐক্যের জন্য এই মিশনারিরা বিপজ্জনক।’’

গত সপ্তাহে বিতর্কিত কথা শোনা গিয়েছিল ত্রিপুরার সদ্য নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের মুখে। তিনি বলেছিলেন, মহাভারতের সময় থেকেই ইন্টারনেট এবং কৃত্রিম উপগ্রহ মারফত সংযোগ ছিল! জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিংহ বলেন, ‘‘ডারউইনের তত্ত্বের বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই। তাই পাঠ্যবই থেকে এই তত্ত্ব সরিয়ে দেওয়া উচিত!’’ আর গত মার্চে লালুপ্রসাদের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) বিহারে অররিয়া কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জেতার পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ বলেছিলেন, ওই জেলা ‘সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘরে’ পরিণত হবে! বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই তো প্রাচীন ভারতে প্লাস্টিক সার্জারি ছিল বলে গণেশের মাথার উদাহরণ দেন। তা হলে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE