Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাজনীতির নাড়ি বুঝে পিএম এখন পুষ্টি মিশন!

মোড় ঘোরাতে নরেন্দ্র মোদী কী করলেন? দিল্লির কাছেই গেলেন রাজস্থানের ঝুনঝুনুতে। যে জেলা ছেলের তুলনায় মেয়েদের জন্মহারের অনুপাতে সবথেকে শোচনীয় ছবির বদল ঘটিয়ে এখন সেরা দশে (১০০০ ছেলে পিছু ৮৩৭ জন মেয়ে থেকে ১০০০ ছেলে পিছু ৯৫৫ জন মেয়ে)।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৭
Share: Save:

আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসে মহিলা সাংসদদের সঙ্গে বেলুন ওড়ালেন সনিয়া গাঁধী। মহিলা সংরক্ষণ বিলের দাবিতে পথে নামল কংগ্রেস। সরব হল সংসদে।

মোড় ঘোরাতে নরেন্দ্র মোদী কী করলেন? দিল্লির কাছেই গেলেন রাজস্থানের ঝুনঝুনুতে। যে জেলা ছেলের তুলনায় মেয়েদের জন্মহারের অনুপাতে সবথেকে শোচনীয় ছবির বদল ঘটিয়ে এখন সেরা দশে (১০০০ ছেলে পিছু ৮৩৭ জন মেয়ে থেকে ১০০০ ছেলে পিছু ৯৫৫ জন মেয়ে)। উপনির্বাচনে লাগাতার হারের পর সামনে বিধানসভা ভোট। তার আগে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ছিল দু’টি। ঝুনঝুনুর নজির দেখিয়ে তাঁর ‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পের জয়গান। দুই, ‘জাতীয় পুষ্টি মিশন’ শুরু করা। মোদী বলছেন, ‘পিএম’কে যত খুশি গাল দিন, এখন ‘পিএম’ বলতে শুধুই ‘পুষ্টি মিশন’ ধরা হবে।

কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ভোটমুখী রাজস্থানের একটি জেলাকে দৃষ্টান্ত করলেও মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে ছেলে-মেয়ের জন্মের হারের অনুপাত (সেক্স-রেশিও) বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছচ্ছে। ইউপিএ জমানায় গুজরাতে প্রতি হাজার ছেলে পিছু মেয়েদের জন্মের হার ছিল ৯১১। মোদী জমানায় হয়েছে ৮৪৮। কংগ্রেস বলছে, যে ‘পুষ্টি মিশন’ প্রধানমন্ত্রী চালু করলেন, সেটি মনমোহন জমানার ‘সামগ্রিক শিশু উন্নয়ন পরিষেবা’র (আইসিডিএস) নতুন নাম। বরাবরের মতো পুরনো প্রকল্প নিজের নামে চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

বিতর্ক আঁচ করে প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘পুষ্টি বাড়াতে এর আগেও চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু মা-শিশুদের যতটা ক্যালরি প্রয়োজন, তা তাদের দেওয়া যায়নি।’’ প্রশ্ন হল, গুজরাতে দীর্ঘদিন মুখ্যমন্ত্রী থাকার পর দিল্লির গদিতে থেকে কেন নিজের রাজ্যেও ‘সেক্স-রেশিও’ বদলাতে পারলেন না নরেন্দ্র মোদী? ঝুনঝুনুর সভায় এর সরাসরি জবাব দেননি মোদী। বলেন, ‘‘সমাজের বিকৃতির জন্য মেয়েদের বাঁচাতে আজ সরকারকে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করতে হচ্ছে, হাত-পা ধরে বোঝাতে হচ্ছে, এর থেকে পীড়াদায়ক কিছু হয় না। কন্যাভ্রূণ হত্যা আমাদের লজ্জা। তাদের বাঁচাতে শাশুড়িদের এগিয়ে আসতে হবে।’’ ২০১৪ থেকে ‘শক্তি’ কর্মসূচির আওতায় ঝুনুঝুনুতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার শুরু হয় পরিবারের মানসিকতা বদলাতে। ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের বেআইনি কেন্দ্রগুলি বন্ধ করা হয়।

কংগ্রেস পুষ্টি-প্রচারে ভুলছে না। দলের তরফে সুস্মিতা দেব বলেন, ‘‘লোকসভায় মোদীর সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম, এনসিপি, বিজেডির সমর্থন রয়েছে মহিলা সংরক্ষণ বিলে। তা-ও এই বিল তিনি আনছেন না।’’ বিজেপির মত, এখনও সব দলে ঐকমত্য নেই। কংগ্রেসের পাল্টা, নোটবন্দি আর তিন তালাকের সময় ঐকমত্য করে এগিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE