বাইরের অটোরিকশা শিলচর শহরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। শহরের অটোগুলিকেও নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে চলাচল করতে হবে। এমনই সিদ্ধান্ত ট্রাফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ডের। পরিবহণ বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চালু হবে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণের নতুন নিয়ম। ‘শিলচর অটো ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ জানিয়ে দিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত তাঁরা মানবেন না। প্রয়োজনে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
কাছাড়ের জেলা পরিবহণ অফিসার অংশুমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, তারাপুর ইঅ্যান্ডডি কলোনি, জেলা শিল্প কেন্দ্র, রংপুর সদরঘাট সেতু ও শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘সীমানায়’ আটকে থাকবে শহরের অটোরিকশা। বাইরের অটোরিকশা এই এলাকার ভেতরে ঢুকতে পারবে না।
অটো ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অবশ্য বাইরের অটোর শহরে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু শহর আর গ্রামের সীমারেখা নিয়ে তাদের নানা প্রশ্ন। অ্যাসোসিসেশনের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ ভট্টাচার্য জানান, শিলচরের অটোরিকশাগুলিকে ১৬ কিলোমিটার ব্যাসে চলাচলের জন্য অটো পারমিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন যে সীমানা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা চতুর্দিক ঘুরেও ১৬ কিলোমিটার হবে না। দ্বিতীয়, যাঁদের বাড়ি শহরের ১৬ কিলোমিটারের ভেতরে, কিন্তু নতুন সীমানার বাইরে, তাঁদের ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেবে সরকার? শহরে ঢুকতে না দিলে পারমিট দেওয়া অর্থহীন, আর ঢুকতে দিলে তাঁরা কি তাঁদের ইচ্ছেমতো অটোরিকশা নিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন না? তাঁর প্রশ্ন, শহরে যানজটের জন্য অটোরিকশাকে দায়ী করা হয়। কিন্তু রাস্তাঘাট, ফুটপাত এবং বাইপাস নিয়ে সবাই নীরব। শহরে মিনিবাস-অটো ছাড়া কোনও বাণিজ্যিক যান চলবে না বলে হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু সিপিআইএমএল অফিসের সামনে এবং রাঙ্গিরখাড়িতে সুমো-ম্যাক্সের স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। বাসও মেলে ট্রাঙ্ক রোডে। তা হলে অটোর বেলায় কেন এত কড়াকড়ি?
চৈত্রমাসে যেখানে-সেখানে বাইক দাঁড় করিয়ে রাখার বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছিল পুলিশ, সেই দিনগুলির উল্লেখ করে বিকাশবাবু বলেন, ‘‘তখন যানজট অনেকটা কমে গিয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, অহেতুক অটোরিকশাকে দোষারোপ করা হয়।
অ্যাসোসিয়েশনের দুই উপ-সভাপতি নির্মল দে, বাবুলাল হালদার বলেন— ‘১৬ কিলোমিটারের পারমিট যখন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ওই দুরত্ব চলতে দেওয়া উচিত। পরিবহণ বিভাগের এমন সিদ্ধান্তে শুধু অটোচালকরা নন, যাত্রীদেরও দুর্ভোগ বাড়বে। উদাহরণ টেনে অটোরিকশা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘‘শিলচর থেকে কোথাও যেতে হলে প্রথমে বাস টার্মিনাসে যেতে হয়। পরিবহণ আধিকারিকরা শহরের সীমানা ছোট করায় এখন এক অটোয় বাস টার্মিনাসে যাওয়া সম্ভব নয়। ব্যাগপত্র নিয়ে ইঅ্যান্ডডি কলোনিতে অটো বদল করতে হবে।’’ তাই এ নিয়ে অটোযাত্রীদেরও সরব হতে তাঁরা আহ্বান জানান।
জেলা পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বাসবাবু বলেন, ‘‘অটোমালিকদের সঙ্গে কথা বলার পরই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। ট্রাফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সভার পর তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয়েছে।’’ কিন্তু বিকাশ ভট্টাচার্য, ধীরাজ রায়, তৈয়ীবুর রহমানরা এই দাবিকে অসত্য বলে উড়িয়ে দেন।
তাঁরা বলেন, ‘‘বৈঠকে আমাদের প্রশ্নগুলির স্পষ্টীকরণ মেলেনি। তাই আমরা জানিয়ে এসেছি, সে সবের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত সীমারেখা মানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy