Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আয়করে ছাড়ের ইঙ্গিত নির্মলার

মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবীর মুখে হাসি ফুটিয়ে আজ অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মোদী সরকার যে সব পদক্ষেপের কথা ভাবছে, তার মধ্যে আয়কর কমানোর ভাবনাও রয়েছে।

নির্মলা সীতারামন।

নির্মলা সীতারামন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪০
Share: Save:

এ বার আয়কর কমানোর ইঙ্গিত দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এখনই না হলেও, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির বাজেটে।

মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবীর মুখে হাসি ফুটিয়ে আজ অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মোদী সরকার যে সব পদক্ষেপের কথা ভাবছে, তার মধ্যে আয়কর কমানোর ভাবনাও রয়েছে।

অর্থনীতিতে গতি আনতে, বেসরকারি লগ্নি বাড়াতে সম্প্রতি মোদী সরকার কর্পোরেট করের বোঝা কমিয়েছে। কিন্তু তাতে নতুন লগ্নি আসবে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ অর্থনীতিবিদদের মত, মানুষ খরচ করতে চাইছেন না। তাই বাজারে বিক্রিবাটা নেই। বাজারে চাহিদা না বাড়লে নতুন কারখানাও হবে না। সে যতই অর্থমন্ত্রী নতুন কারখানার জন্য ১৫ শতাংশ হারে করের ঘোষণা করুক। এই অবস্থায় অনেকেই আয়কর কমানোর সুপারিশ করেছেন, যাতে আমজনতার হাতে খরচ করার জন্য নগদ টাকা বেশি থাকে। আজ আয়কর কমানো নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘অন্য অনেক ভাবনার মধ্যে এ’টিও রয়েছে।’’

প্রশ্ন উঠেছে, আয়কর কমাতে গেলে রাজকোষ ঘাটতি নাগালের মধ্যে থাকবে তো? কর্পোরেট কর কমাতে গিয়ে সরকারের রাজস্ব খাতে ১.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হবে। ইতিমধ্যেই রাজকোষের ঘাটতি সারা বছরের লক্ষ্যকে ছাপিয়ে গিয়েছে। তার উপর আয়কর কমালে রাজকোষ ঘাটতি কোথায় পৌঁছবে? নির্মলার ইঙ্গিতপূর্ণ জবাব, আমরা ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের পথ থেকে সরিনি। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ঘাটতির লাগাম শিথিল করলেও ক্ষতি নেই।

এপ্রিল-জুনে বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসার পরে জুলাই-সেপ্টেম্বরে বৃদ্ধির হার আরও কমে ৪.৫ শতাংশে নেমেছে। আর্থিক বিষয়ক সচিব, মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার দাবি ছিল, বৃদ্ধির হার নীচে নামার পালা শেষ। এ বার বৃদ্ধির হার বাড়তে শুরু করবে। কিন্তু আজ অর্থমন্ত্রী এতখানি আত্মবিশ্বাস দেখাতে চাননি। তাঁর যুক্তি, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো হতে পারে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আরও সাহায্য দরকার। সেই সঙ্গে তাঁর ঘোষণা, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই বা ‘স্টিমুলাস’-ও শেষ হয়ে যায়নি। আরও আসতে চলেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমার নজর আরও বেশি স্টিমুলাসের দিকে।’’

আর্থিক বৃদ্ধি কমে যাওয়ার পিছনে মূল কারণ যে মানুষের খরচ কমে যাওয়া, সম্প্রতি পরিসংখ্যান মন্ত্রকের সমীক্ষাতেই তা উঠে এসেছিল। কিন্তু সেই সমীক্ষার পদ্ধতিগত ভুলের যুক্তি দিয়ে তা খারিজ করে দেয় সরকার। এর আগে বেকারত্ব তুঙ্গে ওঠা নিয়েও সরকারি সমীক্ষা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মোদী জমানায় চালু হওয়া জিডিপি মাপার নতুন পদ্ধতিতে আদতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অর্থনীতির মাপকাঠি নিয়ে সংশয় থাকলে লগ্নিকারীরা কীসের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করবেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অর্থনীতিবিদেরা।

এ নিয়ে বিতর্কের জবাবে আজ অর্থমন্ত্রীর উত্তর, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই যে পরিসংখ্যানের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। কোনও বাধা ছাড়াই পরিসংখ্যান জোগাতে হবে। কিন্তু সরকারের লক্ষ্য হল, পদ্ধতিতে কোনও ভুল থাকলে, তা-ও শোধরানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Income Tax Nirmala Sitharaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE