নীতি আয়োগ গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে জিএসটি নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মোদী। ছবি: পিটিআই।
নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিল বৈঠকে সম্পূর্ণ গরহাজির পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভা। রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে নীতি আয়োগের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার বৈঠকে যোগ দিলেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও বৈঠকে যাননি। কিন্তু তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া বৈঠকে যোগ দেন। পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করার বিষয়ে বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। এই সর্বসম্মতি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সক্ষমতার প্রমাণ দিল বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্তব্য করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই নীতি আয়োগ গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে এ দিন সভাপতিত্ব করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ী, সুরেশ প্রভু, প্রকাশ জাভড়েকর, রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহ এবং স্মৃতি ইরানি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। যোগী আদিত্যনাথ, মনোহর পর্রীকর, শিবরাজ সিংহ চৌহান, রমন সিংহ, মনোহরলাল খট্টর বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তো ছিলেনই। ছিলেন কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাব ও কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ ও সিদ্দারামাইয়া, বাম শাসিত ত্রিপুরার মানিক সরকার, ইউপিএ শাসিত বিহারের নীতীশ কুমার, বিজেডি শাসিত ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক, এডিএমকে শাসিত তামিলনাড়ুর পলানীস্বামীও। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দেশের সর্বোচ্চ পরিকল্পনা নির্ধারক কমিশনের বৈঠকে যাননি।
শিবরাজ সিংহ চৌহান, সিদ্দারামাইয়া, মেহবুবা মুফতি, মনোহরলাল খট্টর, মনোহর পর্রীকর, রমন সিংহ, সর্বানন্দ সোনোওয়াল— রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর পর। ছবি: পিটিআই।
সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, নীতি আয়োগ গভর্নিং কাউন্সিলের এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বা উপমুখ্যমন্ত্রী ছাড়া অন্য কোনও সরকারি প্রতিনিধিকে ঢুকতে দিতে রাজি ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী। তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, বৈঠকে রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদেরই আসতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী না পারলে উপমুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন। কিন্তু অন্য কোনও মন্ত্রীকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বাংলার কোনও উপমুখ্যমন্ত্রী নেই। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না যাওয়ায় বাংলা ক্যাবিনেটের কোনও সদস্য রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটিতে যোগ দিতে পারেননি।
আরও পড়ুন: বিজেপির সঙ্গে জোট নিয়ে চাপে মেহবুবা
এ দিনের বৈঠকে জিএসটি নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশ জুড়ে নতুন কর ব্যবস্থা জিএসটি কার্যকর হতে চলেছে। সর্বসম্মতির ভিত্তিতে জিএসটি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পাশ হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী এ দিন সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মতাদর্শগত বিভেদ দূরে সরিয়ে রেখে জিএসটি-র জন্য সকলে এক মঞ্চে এসেছেন বলেই প্রধানমন্ত্রীর এই ধন্যবাদ। তিনি বলেন, ‘‘জিএসটি নিয়ে এই সর্বসম্মতি সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর দৃষ্টান্ত হিসেবে ইতিহাসে স্থান পাবে।’’
নীতি আয়োগ এ বার থেকে তিন ধরনের পরিকল্পনার ভিত্তিতে কাজ করবে বলে প্রধানমন্ত্রী এ দিনের বৈঠকে জানিয়েছেন। ১৫ বছরের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, ৭ বছরের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা, ৩ বছরের অ্যাকশন এজেন্ডা— এই তিন ধরনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ‘নতুন ভারত’ গড়ার যে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, তা পূরণের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা এবং প্রতিটি রাজ্যের সহযোগিতা জরুরি— মন্তব্য করেছেন মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy