জলসঙ্কট নিয়ে বিপদঘণ্টা বাজাল নীতি আয়োগ।
ভারতের জলসঙ্কট নিয়ে বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দিল নীতি আয়োগ। আশঙ্কার সুরে আয়োগ জানিয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো দেশের প্রধান ২২টি শহরের ভূগর্ভস্থ জল নিঃশেষিত হবে। এর সঙ্গে, জনবিস্ফোরণের ফলে ২০৩০ সালের মধ্যেই দ্বিগুণ হবে জলের চাহিদা।
যে ২২ শহরের জলের সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে, দিল্লি , চেন্নাই, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, নাগপুর, হায়দরাবাদ, সাগর, কোয়্মবত্তুর, শোলাপুর, বিজয়ওয়াড়া, ঔরঙ্গাবাদ, উজ্জয়নী, ভোপাল , লাতুর, কোচি, গুড়গাঁও, ইনদওর, অমরাবতী।
দেশে পানীয় জলের জোগান কেমন, তার ব্যবহারই বা কতটা সঠিক, এ রকমই নানা বিষয় খতিয়ে দেখে ‘কম্পোজিট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট ইনডেক্স’ নামে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে নীতি আয়োগ। কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী এই রিপোর্টটি প্রকাশ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, ‘‘সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জলসঙ্কটের মুখে পড়েছে দেশ।’’
রিপোর্টে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত পানীয় জল পাচ্ছেন না দেশের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ। পানীয় জলের সমস্যা প্রতি বছর কেড়ে নেয় প্রায় দু’লক্ষ মানুষের প্রাণ। প্রশ্ন ওঠে, জনবিস্ফোরণের চাপেই কি ধীরে-ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে জলসস্পদ? নাকি এর পেছনে রয়েছে প্রশাসনিক ব্যর্থতাও?
আরও পড়ুন: কুয়োয় নামার সাজা, দলিত নাবালকদের নগ্ন করে ঘোরানো হল গ্রামে
আরও পড়ুন: বিজেপি ছাড়ার ইঙ্গিত শত্রুঘ্ন, কীর্তির
নীতি আয়োগের রিপোর্টে কিন্তু জোড়া সমস্যারই ইঙ্গিত রয়েছে। যেমন সেচ ব্যবস্থা, পানীয় জলের বন্টন কিংবা জলাশয় ব্যবহারের মতো ২৮টি সূচক খতিয়ে দেখে, বিভিন্ন রাজ্যের অবস্থান চিহ্নিত করেছে নীতি আয়োগ। দেখা যাচ্ছে, জলসম্পদের সঠিক ব্যবহারে প্রথম স্থানে রয়েছে গুজারাত। এর পরে মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক ও মহারাষ্ট্র। পশ্চিমবঙ্গের অবশ্য কোনও তথ্য ওই রিপোর্টে নেই।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আসল সমস্যা হল, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান, হরিয়ানার মতো যে রাজ্যগুলো জলসম্পদ ব্যবহারে অনেক পিছিয়ে, সেই সব রাজ্যের মোট জনসংখ্যা দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি। তাদের সম্মিলিত কৃষি উৎপাদন দেশের নিরিখে প্রায় ২০-৩০ শতাংশ। ফলে এই রাজ্যগুলোয় সঙ্কট বাড়লে , সঙ্কটে পড়তে হবে গোটা দেশকেই। এই রিপোর্টে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করেছে নীতি আয়োগ। তাতে বলা হয়েছে, দেশের মোট জলসম্পদের ৭০ শতাংশ দূষিত।
তেষ্টা বাড়বে, কিন্তু জল মিলবে না। তবে কি শেষের সে দিন সমাগত ? আশঙ্কাটা যেন উস্কে দিল নীতি আয়োগের রিপোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy