বাস্তব যে এতটা কঠিন, বিহার বিজেপি তা ভাবতে পারেনি! বিহারের মানুষ কিন্তু ভেতরে ভেতরে তেতে উঠেছিলেন।
ভোটের আগে বার বার বিহারে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদী আর বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ যে ভাবে হিন্দুত্বের প্রচার করেছেন ঢাকঢোল পিটিয়ে, বিহারের মানুষের তা একেবারেই পছন্দ হয়নি।
গত ২৪ ঘণ্টা ধরে পটনা শহর ও তার আশপাশের এলাকাগুলো চষে ফেলে আর স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এই সত্যটাই হাড়েহাড়ে টের পেলাম।
পটনা শহরের লাগোয়া বাগ মহল্লায় বাড়ি আফতাব আহমেদের। আফতাব সরাসরি বললেন, ‘‘ভোটের আগে বার বার বিহারে এসে হিন্দুত্বের প্রচার করে গিয়েছেন মোদী, অমিত শাহ। বিহারের মানুষ এর আগে ভোটের প্রচারে ধর্ম নিয়ে এত বাড়াবাড়ি হতে দেখেননি। বিজেপি ভেবেছিল, এতে তাদের লাভ হবে। কিন্তু এটাই এ বার ব্যুমেরাং হয়ে গিয়েছে। বিজেপি-কে তার চরম খেসারত দিতে হল।’’ একই কথা বললেন মহল্লার আরও এক বাসিন্দা অনক যাদব। অলক বলছিলেন, ‘‘বিজেপি ভেবেছিল, গো-মাংসের বিরোধিতা করলেই বিহারে ভোট জিতে যাওয়া যাবে। কিন্তু, সেই বিহার আর নেই। বিহারের অনেক উন্নয়ন হয়েছে গত দু’-এক দশকে। বিহারকে ভুল বোঝারই মাশুল দিতে হল বিজেপি-কে।’’
দেরি হয়ে গিয়েছে বিলকুল! তবে ভুল যে হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য বিজেপি-র অন্দরমহলে।
ধর্ম নয়, ভোটে ফ্যাক্টর হয়েছে জাতপাতই। ধর্মীয় মেরুকরণ কাজে লাগেনি। জাতপাতের জটিল অঙ্কেই বিজেপি পর্যুদস্ত হয়েছে।
বিহারে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর আজ ঘরোয়া আলোচনায় বসে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব।
রাজ্য বিজেপি-র একটি সূত্রের খবর, ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি-র রাজ্য নেতারা এই হারের মোটামুটি তিনটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন। প্রথমত, ধর্মীয় মেরুকরণের ভিত্তিতে ভোট না হয়ে জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট হয়েছে বলেই এমন ফলাফল হয়েছে। দ্বিতীয়ত, যতটা আশা করা হয়েছিল, যুব সম্প্রদায়ের ভোট ততটা পায়নি বিজেপি। আরও সঠিক ভাবে বলতে হলে, যুব সম্প্রদায় বিজেপি-কে দারুণ ভাবে হতাশ করেছে। তৃতীয়ত, লোক জনশক্তি পার্টি নেতা রামবিলাস পাসোয়ান ও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঁঝির ওপর ভরসা রাখার কোনও ‘রিটার্ন’ অন্তত ভোটের বাক্সে পায়নি বিজেপি। দু’জনেই তাঁদের ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পারেননি। তার ফলে বিজেপি-রও কোনও লাভ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy