Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Natinal News

হারানো চড়াই ফিরতে পারে, বারান্দার বাটিতে রাখুন একটু জল

উঁচু সিলিং থেকে ঝোলা লম্বা পাখার ঘটাং ঘটাং আর ঘুলঘুলিতে বসে থাকা চ়়ড়াই পাখির কিচির মিচির। আর এই দুইয়ের ছন্দে গ্রীষ্মের দুপুরের ভাত ঘুম। হারিয়ে গিয়েছে সেই সময়টাই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ১৭:১৪
Share: Save:

উঁচু সিলিং থেকে ঝোলা লম্বা পাখার ঘটাং ঘটাং আর ঘুলঘুলিতে বসে থাকা চ়়ড়াই পাখির কিচির মিচির। আর এই দুইয়ের ছন্দে গ্রীষ্মের দুপুরের ভাত ঘুম। হারিয়ে গিয়েছে সেই সময়টাই। নেই সেই পাখার ঘটাং ঘটাং, কড়ি-বরগার আনাচ-কানাচেও দেখা মেলে না চড়াই পাখির। অপরিকল্পিত নগরায়নের প্রভাবে যে সত্যিই আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে তারা। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাঙালি গৃহস্থ জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা চড়াই পাখিও জায়গা নেবে অবলুপ্ত প্রাণীদের তালিকায় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্রমশ কমতে থেকেছে চড়াইয়ের সংখ্যা। ভারতের নেচার ফরেভার সোসাইটির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাই ২০ মার্চকে ওয়ার্ল্ড হাউজ স্প্যারো ডে হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্সের ইকো-সিস অ্যাকশন ফাউন্ডেশন। উদ্যোগে যোগ দিয়েছে আরও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থাও। ১৮ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের গ্রেট স্প্যারো কাউন্ট।

২০১২ সালে হাউজ স্প্যারোকে স্টেট বার্ড অব দিল্লি ঘোষণা করা হয়। উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগহীনতা, প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়াকেই এর প্রধান কারণ বলেছেন নেচার ফর এভার সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা, প্রকৃতি সংরক্ষক মহম্মদ দালিওয়ার। তিনি বলেন, ‘‘নিষ্ঠুর নগরায়ন’-এর শিকার হয়েছে চড়াই পাখিরা। এতে শুধু ওদেরই ক্ষতি হয়নি, প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মানবজাতিও। বর্তমান প্রজন্ম শুধু প্রযুক্তির দ্বারাই আবদ্ধ। প্রকৃতির সঙ্গে কোনও সংযোগই নেই ওদের। ঠিক তেমনই আগে বাড়ির মহিলারা বাড়ির অতিরিক্ত দানাশস্য, খাবার ছড়়িয়ে দিতেন জানলায় বসা পাখিদের উদ্দেশে। এখন প্যাকেজড খাবারের রমরমা, চাষের কাজে ব্যবহৃত পেস্টিসাইড ও পরিবর্তিত জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের অভাবেও হারিয়ে যাচ্ছে চড়াই। আবার বাসা তৈরির জন্য চড়াইদের দরকার হয় খোপ, ফাঁক ফোকর। জানলার ঘুলঘুলি, কড়ি-বরগার মাঝে যে নিশ্চিন্ত আশ্রয় খুঁজে নিত চড়াইরা, ফ্ল্যাটবাড়ি কেড়ে নিয়েছে সেই নিশ্চিত আশ্রয়ও।’’

আরও পড়ুন: ২০২৫-এর পর আর থাকা যাবে না বেঙ্গালুরুতে!

২০০৫ সাল থেকে ভারতে পাখি সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার কাজ করে চলেছে নেচার ফর এভার সোসাইটি। গ্রীষ্মকালের শুরুতেই তাই দালিওয়ারের অনুরোধ, বাড়ির বারান্দায় ঝুলিয়ে রাখুন কাঠের খাঁচা, বাটিতে রাখুন অল্প জল। যাতে আপনার বাড়ির আশ্রয়ে তেষ্টা মেটাতে পারে ওরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE