আম্মার ছবি নিয়ে পনিরসেলভাম (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশে রাম নিয়ে বিজেপির নতুন রাজনীতির মধ্যেই দক্ষিণে নতুন রামায়ণের নজির গড়লেন তামিলনাড়ুর অস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী ও পনিরসেলভাম। রামায়ণে সিংহাসনে রামের পাদুকা রেখে রাজ্য শাসন করতেন ভরত। আর চেন্নাইয়ে আম্মা জয়ললিতার শূন্য আসন আর তাঁর ছবি সামনে রেখে মন্ত্রিসভার বৈঠক সারলেন পনিরসেলভাম।
অসুস্থ মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা হাসপাতালে ভর্তি তিন সপ্তাহের উপরে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের দায়িত্ব অর্থমন্ত্রী পনিরসেলভানের হাতে তুলে দিয়েছেন রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর আজ ছিল প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক। রয়েছে হাজার বকেয়া সমস্যা। জটিল হচ্ছে কাবেরী জলবিদ্যুৎ বিবাদ।
আজ জয়ললিতার একটি ছবি নিয়ে সম্মেলন কক্ষে ঢোকেন পনিরসেলভাম। সামনে রাখেন আম্মার ছবিটি। ভরত যেমন রামের পাদুকা রেখে বকলমে রাজ্যশাসন করতেন, তেমনি সেই ছবিকে সাক্ষী রেখে সব সরকারি কাজ সারলেন পনিরসেলভাম। বৈঠক চলাকালীন ফাঁকা থাকল বেশ খানিকটা উঁচুতে রাখা জয়ললিতার চেয়ারও। আনুগত্য প্রমাণের এই রীতি অবশ্য তামিল রাজনীতিতে নতুন নয়। বিশেষ করে জয়ললিতার দলে। দিল্লিতে এডিএমকে সাংসদদের আনুগত্য প্রমাণে সাদা শার্টের পকেটে সবসময় আম্মার ছোট্ট একটি ছবি এমন ভাবে রাখতে হয় যাতে তা বাইরে থেকে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে অন্য দলের সাংসদেরা হাসি-মস্করা করলেও, জয়ললিতার সাংসদেরা তাকে পাত্তাই দেন না। তাঁরা জানেন— পকেটে যে আম্মার ছবি রয়েছে, সেটা বোঝা না গেলে আম্মার খাতায় নম্বর কাটা যাবে। সেই ঝুঁকি কেউ নিতে চায় না। এ দিকে প্রায় দশ দিন ধরে আম্মার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নিশ্চুপ সরকার ও দল। হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আর যে ভিআইপিরা ভিতরে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন, তাঁরা আটকে যাচ্ছেন কেবিনের সামনে। যেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছেন শশীকলা, যিনি কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না।
জয়ললিতার স্বাস্থ্য ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হতেই, রাজনৈতিক ফায়দা নিতে আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি। রাজ্যের কংগ্রেস শিবির যখন শশীকলার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে, তখন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব যোগাযোগ রাখছে শশীকলা-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা পনিরসেলভামের সঙ্গে। বিজেপি সূত্রে খবর, জয়ললিতার অবর্তমানে তাঁরা যে এই বর্ষীয়ান নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চান, এমন আশ্বাসও পনিরসেলভামকে দিয়ে এসেছেন সভাপতি অমিত শাহ। এই পরিস্থিতিতে পনিরসেলভামের পাল্লা ভারী বলে বুঝতে পারছে কংগ্রেস হাইকম্যাণ্ড। স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা শশীকলার পক্ষে বাজি ধরলেও, দিল্লি শিবির মনে করছে, ধারে ভারে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন পনিরসেলভাম। অধিকাংশ মন্ত্রী-বিধায়কের সমর্থন তাঁর দিকেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির কংগ্রেস নেতারা চাইছেন পনিরসেলভামের সঙ্গেও যোগাযোগ গড়ে তুলতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy