চিন সীমান্তে অন্য রকম তৎপরতা দেখাতে শুরু করল ভারত। অরুণাচলের তাওয়াং জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা সরগরম হয়ে উঠল ‘অপারেশন বাঙ্কার বাস্টার’-এ। চিন সীমান্তে ভারতীয় সেনার এত বড় মহড়া এই প্রথম। যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় ভারত কতটা প্রস্তুত, চিনকে তা বুঝিয়ে দিতেই অরুণাচল প্রদেশের ইন্দো-চিন সীমান্তে এই মহড়া, জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্তারা।
ভারত-চিন সীমান্ত বা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল-এর (এলএসি) খুব কাছে ভারতীয় সেনা যে মহড়া দিল, তা ঠিক কেমন ছিল?
একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ১০৫ এমএম ফিল্ড গান (কামান) থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া লাইট মেশিন গান এবং সাব মেশিন গান ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের বাঙ্কার তছনছ করার মহড়াও দেওয়া হয়েছে। শুধু আক্রমণ বা প্রতি-আক্রমণ নয়, অরুণাচল সীমান্তে নজরদারিও নিশ্ছিদ্র করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই অপারেশন বাঙ্কার বাস্টারে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন নজরদারি প্রযুক্তির পরীক্ষামূলর ব্যবহারও হয়েছে।
অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে এখনও মানতে রাজি নয় চিন। বেজিং সরকারি ভাবে যে ম্যাপ প্রকাশ করে, তাতে অরুণাচলকে চিনের অংশ হিসেবে দেখানো হয়। ১৯৬২ সালের যুদ্ধে চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি অরুণাচলে ঢুকেও পড়েছিল। পরে অবশ্য চিনা বাহিনী ফিরে যায়। ভারতীয় সেনা সেই পরিস্থিতি আর কিছুতেই তৈরি হতে দিতে চায় না। সম্প্রতি পিপল’স লিবারেশন আর্মির ২৫০ জন জওয়ান এলএসি পেরিয়ে অরুণাচলের পূর্ব কামেং জেলায় ঢুকে পড়েছিল। ভারতীয় সেনা চ্যালেঞ্জ করায় তারা ফিরে যায়। তার পরই অরুণাচল সীমান্তে ভারতীয় সেনার এই শক্তি প্রদর্শন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিভিন্ন ওয়াকিবহাল সূত্র।
আরও পড়ুন: হামলা চালাতে মরিয়া লস্কর, নিয়ন্ত্রণ রেখায় হাজির ২০০-র বেশি!
চিন সীমান্তে আগে কখনও এমন মহড়া ভারত দেয়নি। অপারেশন বাঙ্কার বাস্টারকে তাই সব অর্থেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই অপারেশন যে চিনকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার জন্যই, সেনাবাহিনী কিন্তু তা স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা করছে না। সেনার পদস্থ কর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে কখনও পিপল’স লিবারেশন আর্মি এলএসি অতিক্রম করার চেষ্টা করলে ভারতীয় সেনা বলপ্রয়োগ করবে। ভারত সরকারের তরফ থেকে তেমনই নির্দেশ অরুণাচলে পাঠানো হয়েছে বলে সেনাকর্তারা জানিয়েছেন। তাওয়াং ব্রিগেডের কম্যান্ডার ডি এস কুশওয়াহা সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যমটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘চিনাদের অবশ্যই বোঝা উচিত, এই এলাকায় ভারতীয় বাহিনী উপস্থিত রয়েছে। আমরা যে চিনা সেনার সমস্ত গতিবিধির উপর নজর রাখছি, তাও তাদের বোঝা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy