Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গাঁধীজির কাছে প্রার্থনা করলাম, মোদী হঠাও দেশ বাঁচাও: মমতা

সংসদ ভবনে আজ বুধবার তৃণমূল সাংসদদের ধর্নার কর্মসূচি ছিলই। সেখানে এ দিন হাজির হন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। দলের সাংসদদের সঙ্গে প্রতিবাদ মিছিলেও পা মেলান।

আজ বিকেল তিনটে থেকে বিরোধীদের ধর্না শুরু যন্তরমন্তরে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

আজ বিকেল তিনটে থেকে বিরোধীদের ধর্না শুরু যন্তরমন্তরে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:১৫
Share: Save:

কলকাতার ধর্না মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, এর পর আন্দোলন হবে দিল্লিতে। আজ বুধবার যন্তরমন্তরে সেই বিরোধী সমাবেশ ঘিরে রাজনৈতিক শিবিরে তুমুল আগ্রহ। কে আসবেন, কে আসবেন না, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা, কৌতূহল। আপাতত তিন মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং চন্দ্রবাবু থাকছেনই। অখিলেশ, মায়াবতী, তেজস্বীরা প্রতিনিধি পাঠাবেন, নাকি নিজে আসবেন, সেটা এখনও অনিশ্চিত। তার আগেই সংসদ ভবনে তৃণমূলের সভায় যোগ দিলেন রাহুল গাঁধী। তবে কংগ্রেস সভাপতি যন্তরমন্তরের সভায় যোগ দেবেন কিনা, আপাতত সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে।

সংসদ ভবনে আজ বুধবার তৃণমূল সাংসদদের ধর্নার কর্মসূচি ছিলই। সেখানে এ দিন হাজির হন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। দলের সাংসদদের সঙ্গে প্রতিবাদ মিছিলেও পা মেলান। পরে সংসদের সেন্ট্রাল হলে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আজ আমরা গাঁধীজিকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলাম। কোনও অনুষ্ঠানের আগে আমরা তাঁকে স্মরণ করি। তিনি গণতন্ত্রের প্রতীক। আজ সংসদের অধিবেশন শেষ হচ্ছে এবং বর্তমান সরকারের এটাই শেষ অধিবেশন। আমরা তাই গাঁধীজির কাছে প্রার্থনা করলাম, মোদী হঠাও, দেশ বাঁচাও। দেশের কৃষক, শ্রমিক, দিন মজুর, সাধারণ মানুষের হয়ে এই প্রার্থনা করলাম।’’

কিন্তু যন্তরমন্তরে রাহুলের আসার সম্ভাবনা কতটা? দিল্লিতেও কি ‘বেঙ্গল লাইন’ নেবেন কংগ্রেস সভাপতি? ১৯ জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগড সভা তথা ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া র‌্যালি’তে নিজে যোগ দেননি। কিন্তু দলের দুই নেতা মল্লিকার্জুন খড়গে এবং অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে পাঠিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই সেই সময় ব্রিগেডের সভায় রাহুল যোগ দেননি বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সেই সময় ব্যাখ্যা করেছিলেন। তাহলে দিল্লিতে?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা সম্বন্ধে কতটা জানেন?

আরও পডু়ন: ‘প্রধানমন্ত্রীর জেল হওয়া উচিত’, রাফালে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলে মন্তব্য রাহুলের

যন্তরমন্তরে সভার উদ্যোক্তা আম আদমি পার্টি (আপ)। রাজধানীর রাজনীতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে আপের ‘মধুর’ সম্পর্কের কথাও কারও অজানা নয়। ফলে লোকসভা ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে এবং রাতারাতি সেই তিক্ততা ভুলে রাহুল গাঁধী যন্তরমন্তরের বিরোধী মঞ্চে চলে আসবেন, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। আর এখানেই ব্রিগেডের মতো প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে থাকার সম্ভাবনা উঠে আসছে। সেক্ষেত্রে শ্যাম এবং কূল দুই-ই রক্ষা হবে। পর্যবেক্ষকদের অন্য একটি অংশ অবশ্য সম্ভাবনা এক্কেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। দিল্লিতে সংসদ ভবনের বাইরে তৃণমূল সাংসদদের ধর্নাতে এদিন যোগ দেন রাহুল গাঁধী। আবার দু’দিন আগেই দিল্লিতে চন্দ্রবাবুর অনশন মঞ্চে সশরীরে পৌঁছে গিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এসেছিলেন রাহুল। এই দুই কারণেই সশরীরে রাহুলের উপস্থিতির একটা সম্ভবনা থাকছে। যদিও চন্দ্রবাবু আর কেজরীওয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক এক রকম নয় কংগ্রেস সভাপতির।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিন মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও যাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত, তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। এছাড়াও থাকছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি (এসপি), বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)? এখানে এসেই ধারে-ভারে মমতার ব্রিগেডের চেয়ে কেজরীওয়ালের ডাকা যন্তরমন্তরের সভার ওজন কমার সম্ভাবনা। ব্রিগেডে সুপ্রিমো মায়াবতী না এলেও অখিলেশ এবং তেজস্বী যাদব এসেছিলেন। কিন্তু দিল্লিতে এখনও তাঁরা অনিশ্চিত। আয়োজক আপ সূত্রে খবর, মায়া-অখিলেশ-তেজস্বীরা নিজে আসবেন, নাকি প্রতিনিধি পাঠাবেন, তা এখনও খোলসা করেননি।

নমো-র নানা দিক

আরও পডু়ন: যেখানে প্রিয়ঙ্কার ভয়, সেখানে গোয়েন্দা রয়!

তবে ব্রিগেডের সভায় যেমন শুরু থেকে রাশ নিজের হাতে রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লিতেও সেই সম্ভাবনাই প্রবল। এ দিন সকালে সংসদ ভবনের বাইরে ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। সকাল দশটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা স্লোগান বিক্ষোভের পর সেই ধর্না ওঠে। এ দিনই সংসদের সেন্ট্রাল হলেও যাওয়ার কথাও রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। সেন্ট্রাল হলে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। সৌজন্য বিনিময় হতে পারে শাসক দলের সাংসদদের সঙ্গেও। তার আগে এ দিনই বাংলা ভবন থেকে দিল্লিতে নবনির্মিত জিটিএ ভবনের উদ্বোধন করবেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE