বিধানসভা ভোটের মাস ছয়েক আগে সরকারি অর্থে ‘ব্র্যান্ড বিহার’ তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের প্রয়াস বিরোধীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল। তবে তার তোয়াক্কা করেননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গত কালই বিজেপি-বিরোধী জোটের নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে নীতীশের নাম। ঘোষণা করা হয়েছে, জনতা জোট ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন নীতীশই। আর আজই আনুষ্ঠানিক ভাবে নীতীশ ‘বিহার @ ২০২৫—বড়্ চলে বিহার’ প্রচার কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন।
রাজ্য তথ্য-জনসম্পর্ক দফতরের প্রযোজনায় পেশাদারদের দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই প্রচার পরিকল্পনা। লোকসভা ভোটের আগে ‘মোদী-ব্র্যান্ড’ নির্মাণের রূপকার সেই প্রশান্ত কিশোরকেই নীতীশ তাঁর ‘ভিশ্ন ডক্যুমেন্ট’ তৈরির ভার দিয়েছেন। সঠিক হিসেব সরকারি ভাবে কেউ না দিলেও, বিরোধী বিজেপির দাবি, সরকারি কোষাগার থেকে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা খরচ করে নীতীশ তাঁর নিজের প্রচার শুরু করেছেন। বিরোধীদের সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে নীতীশ বলেছেন, ‘‘আগামী দিনে যে কেউই মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। কিন্তু এই কর্মসূচির ফলে যে তথ্য সমৃদ্ধ নথিপত্র তৈরি হবে তা কাজে লাগবে সকলেরই। উন্নয়নের কাজে রাজনীতি দেখা উচিত নয়।’’ বিরোধীদের দাবি, এই কর্মসূচি চালিয়ে রাজ্যে নিজের কাজের মূল্যায়ন করতে চাইছেন নীতীশ। তার প্রেক্ষিতেই নির্বাচনী ইস্তাহার তৈরি করা হবে। সরকারি ব্যবস্থা ও টাকাকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করে মানুষকে ঠকাচ্ছেন নীতীশ। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, গত ন’বছরের শাসনকালের সাফল্যকে নীতীশ ব্যবহার করবেন। জোট সরকারের শরিক হিসেবে বিজেপিও ওই সাফল্যের অংশীদার। তবে তাকে বিশেষ পাত্তা দেননি গত ন’বছর ধরে বিহারের কাণ্ডারীর (কয়েকটা মাস বাদে) আসনে বসা নীতীশ কুমার। আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নীতীশ বলেন, ‘‘আমরা ন’বছর ধরে অনেক কাজ করেছি। আরও কাজ করার আছে। আগামী দিনের কাজের গতিপ্রকৃতি কী হবে তা এই ‘ভিশ্ন ডক্যুমেন্ট’ই ঠিক করবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর, বর্তমান কাজের নিরিখে আগামী দিনের লক্ষ্য কী হওয়া উচিত তার জন্য মানুষের মতামত নেওয়া হবে। রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার গ্রামে ৪০০ জিপিএস লাগানো মোবাইল ভ্যান পাঠানো হবে। আধুনিক সেই ভ্যানে থাকবে অডিও-ভিডিওর সুবিধা। ‘জনভাগিদারী মঞ্চ’ নামের ওই ভ্যানে রাজ্যস্তরের প্রতিনিধি থাকবেন। তিনিই মানুষের মতামত শুনবেন। সেই মতামত রেকর্ড করা হবে। এ ছাড়াও, উদ্ঘোষ, গৌরব গোষ্ঠী, সম্বাদ, বিহার ডেভেলপমেন্ট ডায়ালগ, বিহার লেকচার সিরিজ, জিজ্ঞাসা, ব্রেকফাস্ট উইথ সিএম, লিডার্স মেমোয়ার নামে বেশ কিছু কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা বিহারের বাসিন্দা এবং সাংবাদিকদের মতামত তাতে নেওয়া হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে সব বিষয় ‘মনিটর’ করবেন। আগামী আট থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া পুরো হবে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্তারা। এ দিন ‘বিহার@২০২৫’-এর ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ট্যুইটার এবং ইউটিউবের সূচনা করেন নীতীশ। যুব সমাজকে টানতে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক কাজ করবে বলেই দাবি নীতীশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy