Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্বাসযোগ্যতা ধ্বংস, সরব মমতা-মায়াবতীরা

তৃণমূল নেত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরিই মন্তব্য করেছেন, ‘‘সিবিআই এখন তথাকথিত বিজেপি ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (বিবিআই)-ই পরিণত হয়েছে! খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’

সিবিআই ইস্যুতে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মায়াবতী। —ফাইল ছবি

সিবিআই ইস্যুতে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মায়াবতী। —ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫৪
Share: Save:

দুই শীর্ষ কর্তার অভ্যন্তরীণ দ্বৈরথের জেরে যে ঘটনা ঘটে চলেছে, তার পরে আর মানুষের কাছে সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা বলে কিছু থাকছে না— এমনই মনে করছেন বিজেপি-বিরোধী দলগুলির নেতা-নেত্রীরা। বিজেপির জমানায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের হালই শোচনীয় হয়েছে বলে সমস্বরে সরব তাঁরা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগ ‘রাবিশ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন!

তৃণমূল নেত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরিই মন্তব্য করেছেন, ‘‘সিবিআই এখন তথাকথিত বিজেপি ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (বিবিআই)-ই পরিণত হয়েছে! খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’ বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর মতে, ‘‘অফিসারদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের জন্যই সিবিআইয়ের এই হাল হয়েছে। কেন্দ্রের সাম্প্রদায়িক, বিভাজনমূলক এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ নীতির কারণে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিও শেষ হয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘সিবিআইয়ের উপরে মানুষের বিশ্বাস ফিরে আসাটা খুবই জরুরি।’’ মায়াবতীর অভিযোগ, বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হয়েছে এবং সে সব কারণেই ধারাবাহিক ভাবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার উপরে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। একই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতাও।

আরও এক ধাপ এগিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষ অধিকর্তা রাকেশ আস্থানার সঙ্গে সিবিআইয়ের অধিকর্তা অলোক বর্মাকেও সরিয়ে দেওয়া নিয়ে। তাঁর প্রশ্ন, সিবিআই যাতে ‘খাঁচার তোতা’ হয়ে না দাঁড়ায়, তার জন্যই সুপ্রিম কোর্ট ওই সংস্থার অধিকর্তার দু’বছরের মেয়াদ বেঁধে দিয়েছিল। আতঙ্কের চোটেই কি বিজেপি সরকার সেই নির্দেশ লঙ্ঘন করল? ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘বিজেপির শীর্ষ নেতাদের হাতে ধরে বসানো অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ এসেছে। এই সময়ে বেআইনি ভাবে সিবিআই প্রধানকেই সরিয়ে দেওয়া হল!’’ বিজেপির শীর্ষ স্তরের সঙ্গে ওই অফিসারের (আস্থানা) সরাসরি যোগসূত্র আড়াল করতেই কেন্দ্র উদ্যোগী হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’

আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির দায়ে কারাগারে। নিজস্ব ভঙ্গিতে একটি ‘গীত’ পরিমার্জনা করে টুইট করেছেন লালুপ্রসাদ, যার বক্তব্য— ‘‘কস্তুরী মৃগ গোটা জঙ্গলে নিজের গন্ধ খুঁজে চলে। তেমনই সিবিআইয়ের নিজের গায়ে দুর্নীতির গন্ধ অথচ তারাই বিরোধীদের মধ্যে দুর্নীতি খুঁজতে বেরিয়েছে!’’ ডিএমকে সভাপতি এম কে স্টালিনের মতে, সিবিআই প্রধানকে অপসারণের সিদ্ধান্তে বিজেপি সরকারের ‘স্বৈরাচার ও প্রশাসনিক নৈরাজ্য’ স্পষ্ট। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর মতো স্টালিনেরও অভিযোগ, ‘‘সিবিআই প্রধান রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এতেই ক্রুদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সরিয়ে আইজি স্তরের এক অফিসারকে শীর্ষ পদে নিয়ে এসেছেন।’’ সিবিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা নাগেশ্বর রাওয়ের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্টালিন।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জেটলি অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘বিরোধীরা কি চান, এই দুই অভিযুক্ত অফিসারের এক জন তদন্ত করুন? যিনি তদন্ত করবেন, তিনি নিজেই অভিযুক্ত— এর চেয়ে অন্যায্য কী হতে পারে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE