Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় চিদম্বরমকে চার্জশিট

দুর্নীতি দমন আইনে এই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ৩১ জুলাই সেটি বিবেচনা করবে আদালত।

পি চিদম্বরম

পি চিদম্বরম

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৯
Share: Save:

মনমোহন সিংহ জমানার অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। দুর্নীতি দমন আইনে এই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ৩১ জুলাই সেটি বিবেচনা করবে আদালত।

এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় সিবিআইয়ের নতুন চার্জশিটে চিদম্বরম, তাঁর ছেলে কার্তি-সহ মোট ১৬ জন ব্যক্তির নাম রয়েছে। যে তালিকায় অর্থনীতি ও কর্পোরেট জগতের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব প্রাক্তন অর্থসচিব অশোক চাওলা-সহ একগুচ্ছ অবসরপ্রাপ্ত আমলার পাশাপাশি নাম রয়েছে এখনও চাকুরিরত দুই আইএএস অফিসারের।

মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার ঠিক আগের দিন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই চার্জশিটকে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ আখ্যা দিয়েছে কংগ্রেস। চিদম্বরমের নিজের দাবি, ‘‘একটা অবাস্তব অভিযোগকে সমর্থন করতে, সিবিআইকে চাপ দিয়ে আমার ও আমলাদের বিরুদ্ধে এই চার্জশিট দায়ের করানো হয়েছে।’’ আজ সকালেও চিদম্বরম টুইট করে মোদী সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। চার্জশিট পেশের পরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আদালতেই এর বিরুদ্ধে জোরালো সওয়াল করা হবে।’’

সিবিআইয়ের অভিযোগ, অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন চিদম্বরম। এয়ারসেল সংস্থায় মরিশাসের ম্যাক্সিস সংস্থা ৩,২০০ কোটি টাকা লগ্নি করে। সে সময়ে সরকারি নীতি অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রীর বিদেশি লগ্নি উন্নয়ন পর্ষদের কাছে ৬০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। তার বেশি হলে মন্ত্রিসভার অর্থ বিষয়ক কমিটির কাছে যেতে হত। সে কারণে বিদেশি লগ্নির অঙ্ক কমিয়ে ১৮০ কোটি টাকা দেখানো হয়। চিদম্বরম শুরু থেকে সবই জানতেন। বেআইনি ভাবে ছাড়পত্র পাইয়ে দেওয়ার জন্য দু’দফায় তাঁর ছেলে কার্তির দু’টি সংস্থাকে ঘুষ দেওয়া হয়। চেস ম্যানেজমেন্ট পায় ২৬ লক্ষ টাকা। অ্যাডভান্টেজ স্ট্র্যাটেজিক কনসালট্যান্ট ৮৭ লক্ষ টাকা পায়।

চিদম্বরম, কার্তির পাশাপাশি সে সময় অর্থ মন্ত্রকের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিব, অধিকর্তা, উপসচিব হিসেবে কর্মরত অশোক কুমার ঝা, অশোক চাওলা, কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ, দীপক কুমার সিংহ, রাম শরণের নামও রয়েছে চার্জশিটে।

এঁদের মধ্যে কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ ও দীপক কুমার সিংহ এখনও কাজ করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য সরকারি অনুমতি এখনও সিবিআই নিয়ে উঠতে পারেনি।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, সিবিআই কেন এত তাড়াহুড়ো করল? মনমোহন-জমানায় কয়লা ও টু-জি কেলেঙ্কারিতে আমলাদের নাম চার্জশিটে ওঠার পরে, আমলারা ভয়ে ফাইলে সই করাই কমিয়ে দিয়েছিলেন। মোদী জমানার শেষ পর্বেও সেই সমস্যা ফিরবে কি না, আপাতত সেই প্রশ্নই দেখা দিয়েছে।

কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া এই সরকারের থেকে আর কী আশা করা যায়? কিন্তু সিবিআইয়ের অন্য চার্জশিটের মতোই এর ভাগ্য হবে। টু-জি মামলাতেও সবাই ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন।’’

এর আগে এই মামলায় প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী দয়ানিধি মারান, তাঁর ভাই কলানিধির বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পেশ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE