Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আবার প্রমাণ হল, তোতা খাঁচাতেই! 

২০১৩ সালে একটি মামলায় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা মন্তব্য করেছিলেন, সিবিআই আসলে খাঁচার তোতা। যে কেবল মালিকের কথা শোনে। তখন ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। 

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫৩
Share: Save:

প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে গ্রেফতারের ঘটনা উস্কে দিল পুরনো এক বিতর্ককে।

২০১৩ সালে একটি মামলায় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা মন্তব্য করেছিলেন, সিবিআই আসলে খাঁচার তোতা। যে কেবল মালিকের কথা শোনে। তখন ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস।

ছয় বছর পরে দিল্লির তখ্‌তে বিজেপি। হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ায় যে ভাবে চিদম্বরমকে তাড়া করে, বাড়ির দেওয়াল টপকে নেমে সিবিআই গতকাল গ্রেফতার করে, তার পিছনে শাসক শিবিরের অঙ্গুলিহেলন রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কংগ্রেসে জল্পনা, সিবিআইয়ের মাধ্যমেই পুরনো হিসেব মেটালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, ভারতবাসী দেখেছেন, কী ভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। চিদম্বরমের বিরুদ্ধে এফআইআর, চার্জশিট বা প্রমাণ না থাকলেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ যে আমলারা বিদেশি অনুদানের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। চিদম্বরমের ছেলে কার্তির মতে, ‘‘স্রেফ প্রতিহিংসা থেকেই সিবিআইকে দিয়ে ওই কাজ করানো হয়েছে। যা ফের প্রমাণ করেছে, সিবিআই শাসক দলের পুতুল ছাড়া কিছু নয়।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নেই। বিজেপি সিবিআই বা অন্য তদন্তকারী সংস্থার কাজে নাক গলায় না। সিবিআই আদালতের সিদ্ধান্তে স্পষ্ট, এটি দুর্নীতির মামলা। আসল ন্যায়বিচার এই শুরু হল।’’

সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ, বড় মাপের তদন্তে ব্যর্থতা সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে অনেক দিনই। গত সপ্তাহেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সিবিআইয়েরই একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর মামলাগুলির ক্ষেত্রে সিবিআই আদালতের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। সিবিআইয়ের একাংশও মনে করে, যে দিন থেকে শাসক দলের নির্দেশে রাজনৈতিক তদন্তে হাত দিয়েছে সিবিআই, সে দিন থেকেই সংস্থার কাজকর্মে তার প্রভাব পড়েছে। অতীতে বফর্স মামলা থেকে শুরু করে পি ভি নরসিংহ রাও, লালকৃষ্ণ আডবাণীর বিরুদ্ধে মামলায়, অখিলেশ-মুলায়মের আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলা বা টু’জি কেলেঙ্কারির তদন্তে কিছুই প্রমাণ করে উঠতে পারেনি সিবিআই।

খাঁচার তোতাকে সরকারি হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত করতে তাই সিবিআইয়ের ক্ষমতা, সংস্থার উপরে নিয়ন্ত্রণ স্পষ্ট করতে আইন আনার পক্ষে সওয়াল করেছেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, শাসক পক্ষ কি এত সহজে ছাড়বে তোতার মালিকানা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBI P. Chidambaram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE