সুর বদলালেন মুফতি মহম্মদ সঈদ। ভোটের সময়ে শান্তি বজায় রাখার জন্য জঙ্গি, পাকিস্তান ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কৃতিত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দু’দিন পর পর জঙ্গি হানার পরে তিনিই আজ বিধানসভায় জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানের উচিত জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা।
শ্রীনগরে বিজেপি-পিডিপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জঙ্গি, বিচ্ছিন্নতাবাদী ও পাকিস্তান সম্পর্কে নরম মনোভাব নিয়ে চলছিলেন মুফতি। পরে কট্টর হুরিয়ত নেতা মাসরাত আলমকে জেল থেকে ছেড়েও দেয় তাঁর সরকার। পর পর দু’দিন জঙ্গি হানার পরে বিষয়টি নিয়ে মুফতি ও বিজেপিকে চেপে ধরেছেন বিরোধীরা। মুফতি বাড়াবাড়ি করছেন বলে বিজেপির অন্দরেও আলোচনা শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে রয়েছে সঙ্ঘের চাপ। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ-সহ অনেক বিষয়েই বিজেপি বেশি জমি ছেড়েছে বলে মনে করছেন সঙ্ঘের নেতারা। মাসরাত আলমের মুক্তির পরে তাই পরোক্ষে ওই পদক্ষেপের সমালোচনা করতে হয়েছিল খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
এই পরিস্থিতিতে আজ বিধানসভায় জঙ্গি ও পাকিস্তান প্রসঙ্গে হইচই শুরু করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স ও বিজেপি বিধায়কেরা। জঙ্গি হানা নিয়ে একটি মুলতুবি প্রস্তাব এনেছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়ক দেবেন্দ্র রানা। সেই প্রস্তাব অবশ্য গৃহীত হয়নি। কিন্তু জোটসঙ্গী বিজেপি বিধায়কেরাও বিক্ষোভ দেখানোয় স্পষ্টতই কোণঠাসা হন মুফতি। তবে ন্যাশনাল কনফারেন্স সদস্যেরা বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, “আপনারা নাটক করবেননা। সরকারে থেকে এই বিক্ষোভ দেখানো অর্থহীন।”
জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পাকিস্তান যদি শান্তি ও সহাবস্থান চায় তবে জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা।” সরাসরি পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের নামও করেছেন মুফতি। তাঁর কথায়, “জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা নওয়াজ শরিফ ও তাঁর সরকারের দায়িত্ব। পাকিস্তানও সন্ত্রাসের শিকার। কিন্তু সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।”
কিছুটা মোদী সরকারের সুরেই আজ কথা বলেছেন মুফতি। তাতে রাজনীতিকেরা অবশ্য বিস্মিত নন। তাঁদের মতে, সন্ত্রাস ও জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে বিজেপির পক্ষে যে বেশি দূর আপস করা সম্ভব নয় তা মুফতিকে বোঝানো হয়েছে। বেশি দূর এগোলে বিজেপি যে জোট সরকারে নাও থাকতে পারে তাও বুঝেছেন তিনি। সেক্ষেত্রে রাজ্যপালের শাসন জারি করে পরোক্ষে ভূস্বর্গের রাশ নিজের হাতে রাখতে পারবেন মোদী। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর মসনদ হারাবেন মুফতি। সেই ঝুঁকি নিতে চান না পিডিপি নেতা।
সন্ত্রাস প্রশ্নে আজ পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছে কেন্দ্রও। ওয়াগা-আট্টারি সীমান্তে বিএসএফের একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, “সীমান্তে সন্ত্রাসের বাতাবরণ কত দিন থাকবে তা পাকিস্তানকেই স্থির করতে হবে। আমরা প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy