নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এ বার সার্ক সাহিত্য সম্মেলনে আমন্ত্রিত সবাই, বাদ শুধু পাকিস্তান!
‘ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচর’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের লেখকদের আমন্ত্রণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিদেশ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাই গত চারদিন ধরে চলা সম্মেলনে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কার সাহিত্যিকরা এলেও লাহৌর বা করাচির লেখকেরা বাদ পড়লেন। আজই সম্মেলনের শেষ দিন।
সূত্রের খবর, এর কারণ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে মেরুকরণকে উস্কে দিতে মোদী থেকে অমিত শাহ যখন প্রতিনিয়ত ‘শত্রু’ দেশের উল্লেখ করে তোপ দাগছেন, তখন একই সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়ানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, এর ফলে তাঁদের মেরুকরণের যে প্রবল প্রয়াস চলছে, তাতে বাধা পড়বে। এই একই কারণে ৪০৩টি আসনের একটিতেও সংখ্যালঘু প্রার্থী দেয়নি বিজেপি। এমনকী, উর্দু সংবাদপত্রেও বিজেপির পক্ষ থেকে একটিও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে এটা স্পষ্ট যে, সচেতন ভাবে এই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের পরে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলার একটা ভাবনাচিন্তা কেন্দ্রের তরফে অবশ্যই চলছে। অন্য দিকে, নওয়াজ শরিফ সরকারও একের পর এক বার্তা পাঠিয়ে বোঝাতে চাইছে যে, আলোচনা শুরু করতে তারা আগ্রহী। নতুন পাক সেনাপ্রধানের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত ইতিবাচক সঙ্কেতই এসেছে । আগামী ১ তারিখ পাকিস্তানের নতুন বিদেশসচিবের দায়িত্ব নিয়ে তেহমিনা জানজুয়া কোন পথে এগোন, সেটাও দেখতে চাইছে মোদী সরকার।
কিন্তু উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন পর্যন্ত প্রকাশ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করাটাই আপাতত রাজনৈতিক লাইন মোদী-অমিত শাহের। দিল্লির মতো শহরে দল বেঁধে পাকিস্তানের কবি সাহিত্যিকরা এলে তা নিয়ে গুঞ্জন ছড়াতে বাধ্য। সেটা ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রশ্নে ইতিবাচক হলেও, উত্তরপ্রদেশের ভোটের ময়দানে বিজেপির পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়াত । স্ববিরোধিতার প্রশ্ন তুলতেন সপা বসপা-নেতৃত্ব। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিজেপি নেতৃত্ব যে জাতীয়তাবাদের আবেগ তৈরি করতে চাইছেন, তাতেও ধাক্কা লাগত।
আর এই সব মিলিয়ে তাই পাক সাহিত্যরস থেকে আপাতত বঞ্চিতই থাকতে হল দিল্লিকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy