Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Parliament

রাফাল চুক্তি, শিখ দাঙ্গার আঁচ সংসদে, সারা দিনের জন্য মুলতুবি অধিবেশন

২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ নেতৃত্বাধীন সরকারের সামনে এটিই শেষ পূর্ণ সময়ের অধিবেশন। যদিও সেই গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন শুরু থেকেই বিঘ্নিত হয় দফায় দফায়। বেশ কয়েক বার মুলতুবি ঘোষণার পর শেষ পর্যন্ত হইচইয়ের জেরে সারা দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করে দেওয়া হয়।

সংসদে রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

সংসদে রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:০৬
Share: Save:

রাফাল চুক্তি এবং চুরাশির শিখ দাঙ্গা নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের জেরে মঙ্গলবার দিনভর উত্তাল হয়ে উঠল লোকসভা এবং রাজ্যসভা। বিজেপি বনাম কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীদের বিতণ্ডা, বিক্ষোভ এবং গোলমালের জেরে বুধবার পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হল দুই কক্ষের অধিবেশন।

এ দিন ছিল সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের ষষ্ঠ দিন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ নেতৃত্বাধীন সরকারের সামনে এটিই শেষ পূর্ণ সময়ের অধিবেশন। যদিও সেই গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন শুরু থেকেই বিঘ্নিত হয় দফায় দফায়। বেশ কয়েক বার মুলতুবি ঘোষণার পর শেষ পর্যন্ত হইচইয়ের জেরে সারা দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করে দেওয়া হয়।

এ দিনের অধিবেশনে কংগ্রেসের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল রাফাল চুক্তি নিয়ে আর্থিক কারচুপির অভিযোগ। অধিবেশনের শুরুতেই রাজ্যসভায় কংগ্রেসের তরফে বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ অভিযোগ তোলেন, ‘‘রাফাল চুক্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে বিভ্রান্ত করেছে সরকার। সারা দেশকেও ভুল বোঝাচ্ছে কেন্দ্র।’’ এই নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অধিকারভঙ্গের প্রস্তাব গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি। যদিও সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি। এর পরই বিক্ষোভ দেখানো শুরু করে কংগ্রেস। অন্য দিকে, রাফাল-কাণ্ডে কংগ্রেসের তোলা যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র নেতৃত্বে তদন্ত করার দাবির সমর্থনে গলা মেলায় সমাজবাদী পার্টিও।

আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশ-বিহারবাসীর জন্যই মধ্যপ্রদেশে জীবিকায় কোপ! কমল নাথের মন্তব্যে বিতর্ক

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর রাফাল চুক্তি নিয়ে রাহুল গাঁধীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে পাল্টা দাবি করেন বিজেপি সাংসদরাও। অধিবেশন কক্ষেই তাঁরা স্লোগান তোলেন, ‘রাহুল গাঁধী মাফি মাঙ্গো, রাহুল গাঁধী চোর হ্যায়’। রাফাল চু্ক্তি নিয়ে দেশের মানুষকে ভুল বোঝানোর জন্য রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধেও অধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনেন বিজেপি সাংসদরা। এক ধাপ এগিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ চেঁচিয়ে বলতে শুরু করেন, ‘‘গাঁধী পরিবার চোর হ্যায়, গলি গলি মে শোর হয়, রাহুল গাঁধী চোর হ্যায়।’’ তাঁর এই স্লোগান শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কংগ্রেস সাংসদরা।

আরও পড়ুন: ৯৯ শতাংশ পণ্যকেই আনা হবে ১৮ শতাংশ জিএসটি-র আওতায়, ইঙ্গিত মোদীর

সংসদের দুই কক্ষেই বিজেপি হাতিয়ার করে শিখবিরোধী দাঙ্গা নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়কেও। এই রায়ে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে। পরে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বিজয় গোয়েল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘রাফাল চুক্তি নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত সরকার। কিন্তু কংগ্রেস সেই আলোচনা না করে পালাতে চাইছে। শিখ দাঙ্গা নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের রায় এবং রাফাল চুক্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মুখ পুড়েছে কংগ্রেসের। সে কারণেই পালাচ্ছে কংগ্রেস।’’

সব মিলিয়ে শিখ দাঙ্গা এবং রাফাল চুক্তি নিয়ে মঙ্গলবারও দিনভর উত্তপ্ত থাকল সংসদ। ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। শেষ হবে ৮ জানুয়ারি। প্রথম কয়েক দিনের গতি প্রকৃতি থেকে স্পষ্ট, এই উত্তেজনা জারি থাকবে অধিবেশনের আগামী দিনগুলিতেও।

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Parliament Winter Session Congress BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE