Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Indian Railways

মাসে দু’লক্ষ দিলেই সাইবার নিরাপত্তার ফাঁক বন্ধ করে দেব, রেলকে প্রস্তাব ই-টিকিট চক্রের মূল পাণ্ডার

সম্প্রতি রেলের ই-টিকিটিংয়ের একটা চক্রের হদিশ পেয়েছে আরপিএফ। অন্যতম চক্রী গুলাম মুস্তাফা-সহ ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে তারা।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:১৮
Share: Save:

মাসে ২ লক্ষ টাকা দিলে সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন তিনি। রেলের সাইবার নিরাপত্তায় যে কতটা ফাঁক রয়েছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার পর এমনটাই দাবি করলেন অনলাইন টিকিট বুকিং চক্রের পাণ্ডা হামিদ আশরফ।

সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে দুবাইয়ে রয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই আরপিএফ-এর প্রধানকে এমনই বার্তা দিলেন আশরফ। সেই সঙ্গে বলেছেন, তাঁকে বা এই চক্রে জড়িত অন্য কাউকে গ্রেফতার করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা অবৈধ সফটওয়্যার তৈরি করতে পারে এবং তা দিয়ে আইআরসিটিসি-র নিরাপত্তা বলয়কে যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে দিতে পারে!

সম্প্রতি রেলের ই-টিকিটিংয়ের একটা চক্রের হদিশ পেয়েছে আরপিএফ। অন্যতম চক্রী গুলাম মুস্তাফা-সহ ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে তারা। এই চক্রের মূল পাণ্ডা হামিদ আশরফকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। সন্দেহ করা হচ্ছে তিনি দুবাইয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। গুরুজি নামে আরও এক চক্রীর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। এর আগে এই কাজের জন্য দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন গ্রেফতার হয়েছিলেন আশরফ। ২০১৬-তে জামিন পাওয়ার পর দেশ ছাড়েন তিনি। সূত্রের খবর, বাইরে থেকেই তিনি সক্রিয় নেটওয়ার্ক চালাচ্ছেন ভারতে।

আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনের করিডোরে দেড় ঘণ্টা পড়ে, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু অচৈতন্য মহিলার

আরও পড়ুন: হিন্দু রাষ্ট্র গড়ার তাগিদে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করছেন মোদী, দাভোস থেকে তোপ ধনকুবের সোরসের

কী ভাবে নেটওয়ার্ক চালাচ্ছেন তাও বিশদে বলেছেন আশরফ। বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ শেয়ার করে তিনি দাবি করেছেন, সেন্টার রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম (সিআরআইএস বা ক্রিস)-এর তৈরি সফটওয়্যার বার বার হ্যাক করে ই-টিকিটের চক্র চালিয়ে গিয়েছেন। আরপিএফ ডিরেক্টর জেনারেল অরুণ কুমারকে মেসেজ করে আশরফ বলেন, “সিআরআইএস বা আইআরটিসি-র মতো সংস্থাগুলোই যদি নিরাপত্তা আটোসাঁটো করতে না পারে তা হলে এর জন্য আমাদের দায়ী করা হচ্ছে কেন? এর আগেও এ বিষয়ে তথ্য শেয়ার করেছি, কিন্তু কেউ বিশেষ গ্রাহ্য করেনি। প্রত্যেকেই ভেবেছিল, আমার বোধহয় মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।”

অন্তত ৫০০টি ইমেল এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ শেয়ার করেছেন বলে দাবি করেছেন আশরফ। এর পরই তাঁর মন্তব্য, রেলের সাইবার নিরাপত্তা যে কতখানি ঠুনকো এর থেকে তা প্রমাণিত হচ্ছে। এখানেই থামেননি আশরফ। আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেন, রেল যদি চায় এই সমস্যার সমাধান করতে তা হলে তাঁর সাহায্য নিতে পারে। তবে শর্তও দিয়েছেন এর পাশাপাশি। আশরফ বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলো যেমন এথিক্যাল হ্যাকার ভাড়া করেন, রেল যদি আমাকেও এথিক্যাল হ্যাকার হিসেবে চায়, তা হলে মাসে ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে।”

তবে এ সবের ঝঞ্ঝাট আর বয়ে বেড়াতে চাইছেন না বলেও দাবি আশরফের। তিনি জানান, যে সব অবৈধ সফটওয়্যার তিনি বিক্রি করেছেন সেগুলো সব নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছেন। আশরফ বলেন, “আমি চাই জীবন থেকে এই উদ্বেগের নিরসন হোক। আমি গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে সময় উপভোগ করতে চাই।” এর পরই তার আর্জি, “স্যর, আমাকে ক্ষমা করে দিন। আর কোনও দিন রেলের সফটওয়্যার বানাব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE