ফাইল চিত্র।
‘‘আইন হবে ভাল কথা। আর যেন কোনও বেকসুরের প্রাণ না যায়। কিন্তু বাবার খুনিরা তো কেউ শাস্তি পেল না। মামলা তো পুরো হিমঘরে চলে গিয়েছে।’’
হরিয়ানার জয়সিংহপুর গ্রাম থেকে ফোনে বলছিলেন আরিফ খান। মোদী জমানায় গোরক্ষার নামে গণপ্রহারে নিহত পেহলু খানের ছেলে। ২০১৭-র ৫ এপ্রিল। জয়পুরের পশুহাট থেকে হরিয়ানার নুহ্-তে গরু কিনে ফিরছিলেন ৫৫ বছরের পেহলু। সঙ্গে দুই ছেলে ইরশাদ, আরিফও ছিলেন। মাঝরাস্তায় অলওয়রে গোরক্ষক বাহিনী গরু পাচারের অভিযোগে চড়াও হয়। বাবার পাশে অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন আরিফও।
পেহলু খানের খুনের মামলা থেকে রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজে সরকার ছয় প্রধান অভিযুক্তের নাম সরিয়ে নেওয়ায় তারা জামিন পেয়ে যায়। অথচ হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় পেহলুই ওই ছ’জনের নাম বলেছিলেন। পেহলুর মার খাওয়ার ভিডিয়োতেই তাদের দেখা গিয়েছিল। অথচ পুলিশের দাবি, মোবাইলের ‘লোকেশন’ অনুযায়ী তারা ওখানে ছিল না। মামলার আইনজীবী আরিফ আজিজ বলেন, ‘‘ঘটনার ভিডিয়োর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কী হবে?’’
পশুহাটে গরু কিনতে যাওয়ার সময় পেশায় দুগ্ধচাষি পেহলুদের ভাবনা ছিল, রমজানের সময়ে বেশি দুধ বেচে কিছু বেশি টাকা আসবে। সেই রমজান মাসেই দিল্লি থেকে ফেরার পথে ফরিদাবাদে ট্রেনে গণপিটুনির শিকার হন জুনেইদ খান। ট্রেনের যাত্রীরা গোহত্যা ও গোমাংস খাওয়ার জন্য তরুণ জুনেইদ ও তাঁর সঙ্গীদের গণপিটুনি দেয়। জুনেইদের খুনের অভিযুক্তদের এক জনও জামিন পেয়ে গিয়েছে। জুনেইদের বাবা জালালুদ্দিন খান সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের আর্জি জানিয়েছেন। তাঁরও অভিযোগ, ‘‘হরিয়ানায় তদন্তই এমন ভাবে হচ্ছে, যাতে দোষীরা জামিন পেয়ে যায়। দোষী সাব্যস্ত হলেও বেশি শাস্তি না হয়।’’
আরও পড়ুন: লোকসভা ভোট হতে পারে মার্চে, সঙ্গে কি ৮ বিধানসভাও
ফোনে পেহলুর কাকা এবং পরিবারের মুখিয়া বৃদ্ধ হুসেন খান বললেন, ‘‘আইন তো হবে। কিন্তু আমাদের তো সংসারই চলছে না।’’ হুসেনের ব্যাখ্যা, জয়সিংহপুরে অধিকাংশই মুসলমান পরিবার। দুধ বেচেই সংসার চলত। কিন্তু গ্রামের মুসলিম পরিবারগুলি ভয়ে গরু-মোষ কেনাবেচাই বন্ধ করে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy