Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

৩৫ হাজার ফুট উপরে রহস্যময় আগুনের গোলা, হতভম্ব তিন পাইলট

মাঝরাতের গ্রহতারায় ভরা আকাশে উড়ে যাচ্ছিল বিমান। শূন্যের বুকে আচমকা আগুনের গোলা দেখে হকচকিয়ে যান পাইলট। কলকাতা থেকে উত্তর-পশ্চিমে বারাণসীর আকাশে জেট এয়ারওয়েজের পাইলট তখন ৩৬ হাজার ফুট উপরে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০৫
Share: Save:

মাঝরাতের গ্রহতারায় ভরা আকাশে উড়ে যাচ্ছিল বিমান। শূন্যের বুকে আচমকা আগুনের গোলা দেখে হকচকিয়ে যান পাইলট। কলকাতা থেকে উত্তর-পশ্চিমে বারাণসীর আকাশে জেট এয়ারওয়েজের পাইলট তখন ৩৬ হাজার ফুট উপরে। দিল্লি থেকে যাত্রী নিয়ে উড়ছেন ব্যাঙ্কক অভিমুখে।

দিন তিনেক আগেকার ঘটনা। রাত তখন ১টা বেজে গিয়েছে। আগুনের গোলা দেখে সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এ সব জানান পাইলট। চোখের ভুলও তো হতে পারে! কিন্তু জেটের ওই পাইলটের কাছ থেকে বার্তা পাওয়ার মিনিট পাঁচেকের মধ্যে পরপর দু’টি বিদেশি বিমানের পাইলটও একই বার্তা পাঠান। তাঁরাও তখন বারাণসীর আকাশেই এবং তাঁদেরও অবস্থান তখন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ফুট উঁচুতে। একটি বিমান পশ্চিম এশিয়া থেকে উড়ে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার দিকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ইউরোপের দিকে যাচ্ছিল অন্য বিমানটি।

এক এটিসি অফিসারের কথায়, ‘‘প্রথমেই আমাদের মনে হয়েছিল, আকাশে কোনও বিমানে বড় ধরনের বিস্ফোরণ হলে আগুনের এ-রকম গোলা দেখা যেতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় খোঁজ।’’ ওই সময়ে বারাণসীর আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া সব বিমানের খোঁজ নিতে শুরু করেন এটিসি অফিসারেরা। কিন্তু তেমন কোনও দুর্ঘটনার খবর মেলেনি।

তা হলে কী ঘটেছিল? তিন জন পাইলট ঠিক কী দেখে বললেন যে, সেটা আগুনের গোলা?

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, ওই তিন পাইলটে ঠিক কী দেখেছিলেন, তার ছবি না-দেখে নিশ্চিত কিছু বলা কঠিন। অনেক সময় আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত উল্কা ছুটে যায়। উল্কা একটু বড় মাপের হলে তা বায়ুমণ্ডলে ঢোকার পরে ঘর্ষণে জ্বলে ওঠে। তখন সেটিকে আগুনের গোলার মতোই দেখায়। আর উল্কাপিণ্ড যত বড় হবে, আগুনের গোলার আকারও তত বড় হবে। এবং সে-ক্ষেত্রে তার অবশিষ্ট অংশ এসে পড়বে মাটিতে। ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছিল বলে জানাচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এ বার বারাণসী বা তার আশপাশের আকাশে তেমন কোনও উল্কাপাতের কথা জানা যায়নি। ‘‘তবে সব ক্ষেত্রেই যে উল্কার অবশেষ মাটি পর্যন্ত এসে পৌঁছবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। উল্কাখণ্ডের আকার ছোট হলে তা আকাশেই পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে,’’ বলছেন এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

সাধারণত উল্কাবৃষ্টি হলে তার কথা আগেভাগে অঙ্ক কষে বার করে নিতে পারেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কোনও ছোট উল্কাখণ্ড আচমকা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসবে কি না, তা জানা যায় না। বারাণসীর ঘটনা নিয়ে কলকাতা থেকে দিল্লিতে বিমান মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের একটি সূত্র জানায়, ওই ঘটনার ব্যাপারে তাদের কাছ থেকে কিছু জানতে চাওয়া হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Ball Aircraft Pilot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE