পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়ন করতে গিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে প্রায়শই পার্টির বাধার মুখে পড়তে হতো। পিনারাই বিজয়নের ক্ষেত্রে সেই নাক গলানোর ভুল করছে না সিপিএম। বলা ভাল, বিজয়নই নাক গলাতে দিচ্ছেন না।
হার্ভার্ডের উদারবাদী অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথকে নিজের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করেছেন কেরলের নতুন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই। তাতে আপত্তি তুলে সিপিএম পলিটব্যুরোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলেন প্রবীণ নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন। কিন্তু দিল্লিতে দু’দিনের বৈঠকের পর পলিটব্যুরো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দল এ নিয়ে আদৌ নাক গলাবে না। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে পার্টির কিছুই বলার নেই।
সত্যিই কি বলার কিছু ছিল না? পলিটব্যুরোর সূত্র বলছে, পিনারাই বিজয়নের দাপটের সামনে কেউ মুখ খোলারই সাহস পাননি। তাঁর তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো কেরলও ঋণগ্রস্ত রাজ্য। রাজ্যের হাজার হাজার যুবক আরবের দেশগুলিতে কাজ করতে যান। রাজ্যের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হল তাঁদের পাঠানো বিদেশি মুদ্রা। কিন্তু আরবের দেশগুলিতে মন্দার জেরে এখন সেখানেও কাজের সুযোগ কমছে। রাজ্যের কোষাগার ও কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে তাই শিল্পায়নের পথেই হাঁটতে চান পিনারাই। সে কথা মাথায় রেখেই গীতা গোপীনাথের মতো আন্তর্জাতিক বিষয় ও অর্থনীতির অধ্যাপককে উপদেষ্টা বেছেছেন তিনি।
পিনারাইয়ের এই যুক্তির সামনে ভি এস-এর আপত্তি খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে। পলিটব্যুরোর সূত্রের ব্যাখ্যা, ক্ষমতায় আসার পর কেরলের বাজেটেও যে সব ঘোষণা করা হয়েছে, তার মধ্যে উদার অর্থনীতির ছাপ স্পষ্ট। যেমন, মাল্টি-পারপাস ইকনমিক জোন বা বহুমুখী অর্থনৈতিক অঞ্চলের কথা ঘোষণা হয়েছে বাজেটে। যা আসলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা এসইজেড-এরই নামান্তর।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় দিল্লিতে এলেই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করতেন। পিনারাই একই ভাবে দলের বৈঠকের জন্য দিল্লিতে এলেও নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করছেন। এ বারও পলিটব্যুরো শুরুর আগে শুক্রবার মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য বাস্তববাদী পথেই হাঁটছেন কেরলের কমিউনিস্ট মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy