দলীয় সদস্যদের সংযত হওয়ার পরামর্শ দিলেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
তিনি কংগ্রেস বিরোধী। ঘোর বিরোধী স্বজনপোষণেরও। জাতীয় রাজনীতিতে পদার্পণের সময় থেকেই বার বার এমন বলতে শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু এবার নিজের দলের সদস্যদের কাজকর্মেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেন তিনি। সামনেই একাধিক রাজ্যে নির্বাচন। আবার পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনও এগিয়ে আসছে। তাই দলীয় সদস্যদের সংযত হওয়ার পরামর্শ দিলেন। জানিয়ে দিলেন, স্বজনপোষণ একেবারেই বরদাস্ত করবেন না। এমনকি, বিদেশ যাত্রার আগেও তাঁর পরামর্শ নিতে হবে বলে নির্দেশ দিলেন।
গত মাসে দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক বসেছিল। সেখানেই দলীয় কর্মী বিশেষত বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপ মুখ্যমন্ত্রীদের সতর্ক করে দেন প্রধানমন্ত্রী। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের বুঝিয়েছেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন পারিবারিক চাপ আসতেই পারে। তাই বলে সব বায়নাক্কা মেনে নেওয়া যাবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ স্বজনপোষণই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আমাদের মূল অভিযোগ। নিজেদের ঠিক রাখতে না পারলে সেই অভিযোগ দুর্বল হয়ে পড়বে।’’
উদাহরণ স্বরূপ নাকি দু’দশক আগে মধ্যপ্রদেশে বিজেপির পরাজয়কে টেনে আনেন মোদী! ওই বিজেপি নেতা জানান, ‘‘পরিবারের লোকজনের মধ্যে টিকিট বিলিয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন নেতারা। তার জন্যই হারতে হয় দলকে।’’
আরও পড়ুন
তবে কি মোদীর নির্দেশেই দেশ ছাড়েন মাল্য? প্রশ্ন রাহুলের
চলতি বছরে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচন। তেলঙ্গানায় নির্বাচনও এ বছরই হতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যে বিধানসভা ভেঙে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। এ দিকে ভোটের টিকিট নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরেও। দলীয় সূত্রে খবর, আসন্ন নির্বাচনে আত্মীয় পরিজনদের টিকিট পাইয়ে দিতে নাকি মরিয়া হয়ে উঠেছেন কমপক্ষে জনা কুড়ি বিজেপি নেতা! তাই সময় থাকতেই তাঁদের সাবধান করে দিয়েছেন মোদী।
এই মুহূর্তে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থানে বিজেপির সরকার রয়েছে। তবে সেখানে মন্ত্রী আমলাদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে চায় তারা। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর জেরেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত! কারণ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে কোনও নেতা বা মন্ত্রীর বিরোধিতা করতে পারেন সাধারণ মানুষ। সে ক্ষেত্রে ওই নেতা বা মন্ত্রী পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হারাবেন। সেই সুযোগে অন্য দলের কোনও নেতা ওই পদে জয়ী হয়ে যেতে পারেন।
আরও পড়ুন
হিন্দুত্ববাদীদের উত্থানে ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র খোয়াচ্ছে ভারত: রিপোর্ট মার্কিন কংগ্রেসের
গত কয়েক বছরে গোরক্ষা-সহ একাধিক ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমা হয়েছে মানুষের মনে। খোলাখুলি সে কথা প্রকাশও করছেন তাঁরা। তাতেই উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।কংগ্রেস বা অন্য কোনও বিরোধী দলকেই সেই সুযোগ দিতে চান না তাঁরা। মোদী নিজে দলের হয়ে সে কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এর আগেও প্রধানমন্ত্রীকে এমন অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে। জয়ন্ত সিংহকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয় এই কারণে যে তাঁর পিতা প্রাক্তন বিজেপি মন্ত্রী যশবন্ত সিংহ কোনও সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন না। অবশ্য তার অন্যথাও হয়েছে। সম্প্রতি বিহারের রাজ্যপাল নিযুক্ত হয়েছেন লালজি টন্ডন। তাঁর ছেলে আশুতোষ উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের মন্ত্রী।
বিদেশ যাত্রা নিয়ে দলের মুখ্যমন্ত্রীদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা নেই কোনও বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর। তবে সরকারি কাজ হোক বা ব্যক্তিগত প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে আগে সে বিষয়ে জানাতে হবে তাঁদের। দেখাতে হবে উপযুক্ত কারণও।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy