বিধায়কের শংসাপত্র।
বরাক উপত্যকার জাতীয় সড়ক সুরক্ষায় মাঠে নেমেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই লরি চলাচলে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। চলছে ব্যাপক অভিযান। অসম-মেঘালয় সীমানার দিগরখাল চেকগেটে গত রাতে ৪টি ট্রাক আটক করা হয়। তিনটি কয়লাবাহী, অন্যটিতে ছিল সিমেন্ট।
তবে রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের চাপে ওই কড়াকড়ি কতটা ধরে রাখা যাবে, তা নিয়ে শুরুতেই সংশয় দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, গত রাতে বাজেয়াপ্ত ট্রাকগুলির একটিকে ছাড়াতে আজ সকালে তৎপর হন দক্ষিণ করিমগঞ্জের বিধায়ক আজিজ আহমেদ খান। নিজের লেটারহেডে গাড়িমালিককে শংসাপত্র দিয়েছিলেন তিনি। ট্রাক ও তাঁর মালিককে ছেড়ে দিতে বলেন। ফোন করেন পুলিশকর্তাদের।
কাছাড়ের পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন অবশ্য জানিয়ে দেন, কারও আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ পরিচিত হলেও আইন নিজের পথে চলবে। প্রথমত, মেঘালয় থেকে কয়লা পরিবহণের ক্ষেত্রে গ্রিন ট্রাইব্যুনালের ছাড়পত্র থাকতে হবে। পরে অন্যান্য কাগজপত্র দেখানো ও আর্থিক জরিমানার কথা।
ট্রাকমালিক আব্দুল কুদ্দুসকে শংসাপত্র দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিধায়ক আজিজ খান। তবে তিনি বলেন, ‘‘চিঠিতে আমি ট্রাক ছাড়ার সুপারিশ করিনি। ৬৫ বছরের বৃদ্ধ কুদ্দুসবাবু একটা শংসাপত্র চেয়েছিলেন। ফেরাতে পারিনি। আমার আত্মীয় না হলেও তাঁকে অনেক দিন ধরে চিনি। ভাল মানুষ হিসেবে জানি। শংসাপত্রে সে কথারই উল্লেখ রয়েছে।’’ বিধায়কের বক্তব্য, ৮ ডিসেম্বর ওই শংসাপত্র লিখেছিলেন তিনি। কিন্তু আচমকা এক ট্রাকমালিককে তিনি শংসাপত্র দিতে গেলেন কেন, তার সদুত্তর মেলেনি। জেলার পুলিশকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, পুরনো তারিখ দিয়ে ওই চিঠি লেখা হয়েছিল।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে বরাকে উপত্যকার মানুষ বেহাল জাতীয় সড়ক নিয়ে প্রচণ্ড দুর্ভোগে ছিলেন। এখন কাজ চলছে। যানবাহনে অতিরিক্ত পণ্যবহণ ঠেকানো না গেলে কিছুদিনের মধ্যে রাস্তা ভেঙে যাবে।’’ তাই পরিবহণ বিভাগের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা অভিযান শুরু করেছেন।
তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তা ভাঙা ছাড়াও অতিরিক্ত পণ্যবহণের জেরে রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হয় সরকার।’’ তিনি জানান, আগে দিগরখাল গেটে যেখানে ৫ জন কনস্টেবলের ডিউটি ছিল, এখন তা বাড়িয়ে ১৫ জন করা হয়েছে। সঙ্গে এক জন অফিসার। এ ছাড়া অতিরিক্ত পণ্যবাহী লরি আটকানোর জন্য এক কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী দিয়ে একটি পৃথক দলও গঠন করা হয়েছে। নেতৃত্বে থাকবেন ডিএসপি সুধাংশুকুমার দাস। দুই ‘প্রোবেশনারি’ ডিএসপি-ও সঙ্গে থাকবেন বলে রাকেশবাবু জানিয়েছেন।
পুলিশকর্তা রাকেশ রৌশন জানিয়েছেন, অভিযান চলছিল দেড়মাস ধরে। ওই সময় ২৯টি কয়লা ও সিমেন্ট বোঝাই বাজেয়াপ্ত করে পরিবহণ বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই সব ট্রাক থেকে মোট ১ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর পরও অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ চলতে থাকায় গত কাল থেকে ২৪ ঘণ্টার নজরদারি শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy