Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাজনীতির দাপট হাতি পাচার চক্রে

রেল-কর্তারা জানাচ্ছেন, রথযাত্রায় আমদাবাদের মন্দিরে চারটি হাতি নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রথম যোগাযোগ করেছিলেন দু’জন— ইমরান খান ওরফে ইমরান সিদ্দিকি এবং হুকুমদার খান ওরফে মুন্না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০২:৪২
Share: Save:

অসমের তিনসুকিয়া থেকে চারটি হাতি গুজরাতে পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছিল হচ্ছিল। দেশ বিদেশের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তৎপরতায় তা থমকেছে। আগামিকাল বিষয়টি নিয়ে গৌহাটি হাইকোর্টে শুনানি হবে। কিন্তু গোটা পর্বে বন দফতর, রাজনৈতিক নেতা ও দালালদের যে অশুভ চক্রের কথা সামনে এসেছে, পশুপ্রেমীরা তাতে আতঙ্কিত।

রেল-কর্তারা জানাচ্ছেন, রথযাত্রায় আমদাবাদের মন্দিরে চারটি হাতি নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রথম যোগাযোগ করেছিলেন দু’জন— ইমরান খান ওরফে ইমরান সিদ্দিকি এবং হুকুমদার খান ওরফে মুন্না। জানা গিয়েছে, এঁরা কেউ বন দফতরের কর্মী বা হাতির মালিক নন। ওয়াগনের ভাড়া নিয়ে দরদাম করা, হাতি জোগাড়ের কাজ এঁরাই করেছিলেন। এই ইমরান এবং দিল্লি থেকে আসা চাপেই হাতি পাঠানোর বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলার শুনানির আগেই চারটি হাতি ব্রহ্মপুত্র মেলে পাঠানোর তোড়জোড় হচ্ছিল। কিন্তু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তুলে ধরে ব্যাখ্যা চায় এবং জানায় আদালতের সিদ্ধান্ত হলে তবেই হাতি পাঠানো হবে।

আরও জানা গিয়েছে, হাতিগুলি গৃহপালিত প্রমাণ করতে তাদের দেহে তড়িঘড়ি মাইক্রোচিপ বসান হয়। বন দফতরও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে চারটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হাতির মালিকের নামে ‘ওনারশিপ সার্টিফিকেট’ তৈরি করে দেয়। অভিযোগ, সব কিছুর পিছনেই ছিল গুজরাতি কোনও প্রভাবশালীর চাপ। ফলে প্রধান মুখ্য বনপালেরও কিছু করার ছিল না। বিষয়টি নিয়ে প্রধান মুখ্য বনপাল রঞ্জনা গুপ্ত কোনও মন্তব্যই করছেন না। মুখে কুলুপ বন দফতরের অন্য কর্তাদেরও।

হাতি পাঠানোর ঠিকাদার ইমরানের বাবা মুমতাজ সিদ্দিকিও কুখ্যাত হাতির দালাল। হাতি পাচারের দায়ে জেলে যাওয়া মুমতাজ বিহার, গুজরাত ও কেরলে অন্তত ১২টি হাতি পাঠিয়েছে। এখন ‘ব্যবসা’ সামলাচ্ছেন ছেলে। স্থানীয় বনকর্তারা জানাচ্ছেন, রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়াতেই বড় বড় নেতা-বনকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করেন ইমরান। নিয়ম করে আরএসএস, বজরং নেতাদের অসম ঘুরিয়ে থাকেন। ইমরানের ফেসবুক প্রোফাইল ও কভার ছবিতেই তা বেশ স্পষ্ট। ২০১৬ সালে ডিগবয় থেকে ভারত বিকাশ মোর্চার হয়ে বিধানসভা ভোটেও লড়েছিলেন।

সূত্রের খবর, অসমের হাতি বাইরের রাজ্যে পাঠানোর বিনিময়ে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা নেয় দালালরা। যার মধ্যে হাতির মালিক পায় ৬-৭ লক্ষ টাকা। এখন পর্যন্ত ৬ মাস বা এক বছরের লিজে বাইরে পাঠানো ৫৩টি হাতির একটিও ফিরে আসেনি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Trafficking Assam অসম হাতি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE