ভেঙে ফেলা হচ্ছে প্রজা বেদিকা।
অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর ৮ কোটির বাড়ি ‘প্রজা বেদিকা’ ভেঙে ফেলল রাজ্য প্রশাসন। গত সপ্তাহেই রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের বৈঠকে অমরাবতীর এই বাড়িটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন সদ্য ক্ষমতায় আসা জগনমোহন রেড্ডি। তাঁর সেই নির্দেশের পরই মঙ্গলবার রাত থেকেই ভাঙার কাজ শুরু করে দেয় রাজ্য প্রশাসন।
জগনমোহনের এই সিদ্ধান্তে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ চন্দ্রবাবু নায়ডু। তিনি বলেন, “সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা বোকামি।” এর পরই তাঁর কটাক্ষ, এমন অনেক মূর্তি আছে যেগুলোর কোনও অনুমতিই নেই। শুধু তাই নয়, বেআইনি জমির উপর তৈরি করা হয়েছে সেই মূর্তিগুলো। সেগুলোর ব্যাপারে কি কোনও ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার? এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই জানিয়েছে তেলুগু দেশম পার্টি।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই দুর্নীতি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন জগনমোহন। ‘প্রজা বেদিকা’র নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় কড়া পদক্ষেপটা শুরু করলেন এখান থেকেই। এই বাড়িতেই রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন জগনমোহন। সেই বৈঠকে ‘প্রজা বেদিকা’ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: নিজামের সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড কার? কোর্টের দ্বারস্থ ভারত-পাক
প্রজা বেদিকা।
চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) যখন রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল, সে সময়েই বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। নিজের বাসভবনের পাশেই ‘প্রজা বেদিকা’ নামে এই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন নায়ডু। এই বাড়ি থেকেই বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাতেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকও করতেন। কিন্তু ওয়াইএসআর কংগ্রেস অভিযোগ তোলে, বাড়িটি অবৈধ ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। বাড়িটির জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণ শেষে দেখা যায় সেই খরচ ৮ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। কেন এত টাকা খরচ হল তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শুধু তাই নয়, বাড়িটি নির্মাণের সময় নদী সংরক্ষণ আইনও অমান্য করা হয়েছে এবং এটা তৈরির জন্য কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন: যোধপুর পার্কের বিশাল ফ্ল্যাট হাতাতেই বৃদ্ধা খুন, ডায়েরির সূত্রে গ্রেফতার প্রতিবেশী
আরও পড়ুন: ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য হচ্ছে, এই প্রথম সর্ব সম্মতিতে
রাজ্যের নতুন সরকারকে লেখা এক চিঠিতে চন্দ্রবাবু নায়ডু আর্জি জানিয়েছিলেন এই বাড়িতে তাঁকে থাকতে দেওয়া হোক। এবং ‘প্রজা বেদিকা’কে বিরোধী নেতার বাসভবন হিসেবে ঘোষণা করা হোক। অভিযোগ, তাঁর সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি রাজ্য প্রশাসন। ‘প্রজা বেদিকা’ ভাঙা শুরু হতেই তেলুগু দেশম পার্টির নেতারা নতুন সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাজ্যের অনেক রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী এই বাড়ি না ভাঙার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্য বিজেপির প্রধান কান্না লক্ষ্মীনারায়ণ। তিনি বলেন, “এই বাড়িটি জনগণের টাকায় তৈরি হয়েছে। সরকারের উচিত এটা না ভেঙে জনগণের কাজেই ব্যবহার করা। ভেঙে ফেলা মানে করদাতাদের সাড়ে ৮ কোটি টাকা নষ্ট করা।”
জনসেনা পার্টির সুপ্রিমো আবার বলেছেন, বাড়িটির জন্য পরিবেশের ক্ষতি হলে তা ভেঙে ফেলাই উচিত। প্রজা বেদিকা যদি ভেঙে ফেলা হয়, তা হলে এ রকম আরও নির্মাণ আছে সেগুলোও ভেঙে ফেলা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy