Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

‘ভারতমাতা কি জয়’, মোদী-মুগ্ধ পুরোহিত

দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে রাম জন্মভূমির পুজোস্থলে আসনে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার পর থেকে পুজোর যাবতীয় রীতি-নীতি, মন্ত্র বলে গিয়েছেন গৌতমই।

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫৫
Share: Save:

পুজোর আসনে বসা পুরোহিতের মুখে ‘ভারতমাতা কি জয়’! মন্ত্রোচ্চারণের ফাঁকে ফাঁকে ‘যজমান’ নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা। কথার তোড় এতটাই যে, শিলান্যাসের ভূমিপুজোর শুভ মুহূর্ত যাতে পেরিয়ে না-যায়, তার জন্য আশেপাশের জনা কয়েককে ঘড়িতে চোখ রাখতে হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে! বুধবার অযোধ্যা-সহ সারা দেশে তাই সান্ধ্য চায়ে পে চর্চায় ভূমিপুজোর পুরোহিত আচার্য দুর্গা গৌতমও।

দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে রাম জন্মভূমির পুজোস্থলে আসনে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার পর থেকে পুজোর যাবতীয় রীতি-নীতি, মন্ত্র বলে গিয়েছেন গৌতমই। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মোদীকে পুজোর শুরুতে হাত ধুতে যেমন বলেছেন, তেমনই দেবতাদের জয়ধ্বনির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন ‘ভারতমাতা কি জয়’! ‘রামজি’, ‘সীতা মাইয়া’, ‘সরযূ নদী’, ‘রাম জন্মভূমি’, ‘হনুমানের জয়’, ‘হর হর মহাদেব’-এর মধ্যে হঠাৎ পর পর তিন বার ‘ভারতমাতা কি জয়’! অনেকে বলছেন, দেশকে মা হিসেবে পুজোর কথা বলতেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও। কিন্তু পুজোর আসনে বসে মন্ত্রের মধ্যে এই উচ্চারণ কি এ দিনের পুজোর অংশ, নাকি নেহাতই প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করা চেষ্টা?

মাঝেমধ্যেই পুজো আর মন্ত্রের বাইরেও পুরোহিত এত কথা বলতে শুরু করেছেন যে, থামানোর জন্য ইশারা করতে হয়েছে। কখনও মোদীর উদ্দেশে বলেছেন, “আপনার মতো সুপুত্রের হাত দিয়েই এই পবিত্র কাজ ভারতমাতার করানোর ছিল।…সারা বিশ্বের সমস্ত জীব ভগবান রামের জয়-জয়কার করছেন। আপনার জয়-জয়কার করছেন।…খুব তাড়াতাড়ি যেন আমরা রামরাজ্যের দর্শন পাই।” আবার কখনও স্বগতোক্তির ধাঁচে বলেছেন, এমন যজমান পাওয়া কি মুখের কথা? দাবি করেছেন, এ তাঁর বহু লক্ষ জন্মের পুণ্যের ফল। তিনি ধন্য।

আরও পড়ুন: রামের রাজত্বে মোদীর পুজো, বুক-পকেট থেকে বার করে দিলেন প্রণামী

এক সময়ে কথার স্রোত এতই ছিল যে, শিলান্যাসের শুভ মুহূর্ত পেরিয়ে যাওয়া নিয়ে যেন কিছুটা উদ্বিগ্ন দেখিয়েছে খোদ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতকে। প্রতি মিনিটে ঘড়ি দেখেছেন পাশে দাঁড়ানো সাধু। পুরোহিত অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, এখনও সময় আছে ঢের। শেষ পর্যন্ত পিছলে যায়নি সময়ও। তবে পুজো শেষেও ফের ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলেছেন গৌতম।

উপস্থিত কারও-কারও মনে হয়েছে, এত কথায় সামান্য কিছুটা বিব্রত বোধ করে থাকতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। পুরোহিত তাঁকে শুধু দেশের ১৩০ কোটি মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে পুজোয় বসা যজমান বলেই ক্ষান্ত হননি, কার্যত তুলে নিয়ে গিয়েছেন দেবতার আসনে, তাতে মোদীরও অস্বস্তি স্বাভাবিক।

আরও পড়ুন: ‘রামরাজ্য দূরে থাক, বিপন্ন গাঁধীর ভারত’

কিন্তু বিরোধী শিবিরের এক নেতার কটাক্ষ, “প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে এ দিন রাম-রাজ্যের সঙ্গে আত্মনির্ভর ভারতের স্লোগানকে জুড়ে দিয়েছেন, ইঙ্গিত দিয়েছেন রামের চরিত্র থেকে ‘রাজ্যপাট চালানোর’ পাঠ নেওয়ার — তাতে পুরোহিতের কথায় প্রধানমন্ত্রীর খুব অখুশি হওয়ার কারণ তাঁর আছে কি?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Ram Mandir Ayodhya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE