এনফোর্সমেন্ট অফিসে যাওয়ার পথে রবার্ট বঢরার সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা। ছবি: এএফপি।
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে রবার্ট বঢরাকে টানা পাঁচ ঘণ্টারও বেশি জেরা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) করল । বুধবার জেরা শেষে রাত দশটা নাগাদ তিনি ইডি দফতর থেকে বার হন। বেরনোর সময় সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, লন্ডনে তাঁর কোনও সম্পত্তি নেই। লন্ডনের ওই ফ্ল্যাটের লেনদেনের বিষয়ে যাঁদের নাম উঠে এসেছে, তিনি তাঁদের কাউকে চেনেন না বলেও জানান কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার স্বামী রবার্ট।
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে এ দিন ইডি দফতরে হাজিরা দেন রবার্ট বঢরা। তাঁকে ইডি অফিসে পৌঁছে দেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। সেখানেই সংবাদমাধ্যমকে বললেন, ‘‘সবাই জানে কী হচ্ছে। আমি আমার স্বামীর পাশেই দাঁড়াচ্ছি।’’ রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দক্ষিণ দিল্লির ইডি অফিসে হাজির হয়ে আসলে নিজের রাজনৈতিক উপস্থিতিই জানান দিলেন প্রিয়ঙ্কা। যা একই সঙ্গে বার্তা ইডি এবং শাসক বিজেপি শিবিরকে।
লন্ডনে একাধিক সম্পত্তি কেনাবেচা নিয়ে আর্থিক তছরুপ করার অভিযোগ আছে রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে। এই সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৯ মিলিয়ন পাউন্ড বা ৮৫ কোটি টাকা। এই নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কারও কারও বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসা এবং প্রিয়ঙ্কার রাজনীতিতে নামার খবর সামনে আসার পর বেড়েছে ইডি-র তদন্তের গতি।
গত বছরের ডিসেম্বরেই দিল্লির একটি ফার্মহাউসে তল্লাশি চালায় ইডি। অভিযোগ, খামারবাড়ির সঙ্গে যুক্ত রবার্ট। জেরা করা হয় তাঁর অন্যতম সহযোগী মনোজ অরোরাকেও। তদন্তে গতি বাড়াচ্ছে ইডি, সেই ইঙ্গিত পেয়ে গত সপ্তাহেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রবার্ট বঢরা। দিল্লি হাইকোর্ট তাঁকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিলেও একই সঙ্গে তদন্তের প্রয়োজনে ইডি-র কাছে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দেন।
আরও পড়ুন: ১৪ সাফাইকর্মী পদে ৪,৬০০ আবেদনকারী, প্রতিযোগিতায় এমবিএ, ইঞ্জিনিয়াররাও
সেই হাজিরা দিতেই বুধবার দক্ষিণ দিল্লির ইডি অফিসে গিয়েছিলেন রবার্ট। আর সবাইকে কিছুটা অবাক করেই তাঁকে ইডি অফিসে পৌঁছে দিয়ে যান প্রিয়ঙ্কা নিজে। শুধু পৌঁছে দেওয়াই নয়, ইডি অফিস থেকে বেরনোর সময় প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘কী চলছে, আপনারা সবাই জানেন। আমি আমার স্বামীর পাশে আছি।’’ এর পরই তিনি ইডি অফিস থেকে সরাসরি চলে যান ২৪ আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দফতরে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, এ দিন মোট ৪০টি প্রশ্ন করা হয় রবার্ট বঢরাকে। প্রতিটির উত্তরই তাঁকে লিখিত ভাবে দিতে বলা হয়। তাঁর সঙ্গে অন্য আর একটি কক্ষে অবশ্য হাজির ছিলেন তাঁর আইনজীবীও।
আরও পড়ুন: ঔরঙ্গজেবের খুনে জড়িত সন্দেহে আটক রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের তিন জওয়ান
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, শুধু স্বামীর পাশে দাঁড়াতেই প্রিয়ঙ্কা হাজির হয়েছেন ইডি অফিসে, এমনটা না-ও হতে পারে। কারও কারও মতে, বিজেপি শিবিরের কাছে নিজের রাজনৈতিক উপস্থিতির বার্তা পৌঁছে দেওয়াই আসল উদ্দেশ্য। সোমবার আমেরিকা থেকে ফেরার পরই তৎপরতা বাড়িয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। কখনও উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, কখনও কংগ্রেস সদর দফতরে নিজের ঘর বেছে নেওয়া, কখনও বা কংগ্রেস নেতাদের ফোন করে এলাকার খোঁজখবর নেওয়া— প্রতি দিনই রাজনীতির আঙিনায় নিজের উপস্থিতি বাড়াচ্ছেন তিনি। এখনও সরকারি ভাবে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার না নিলেও তার উপস্থিতি ছাপ ফেলেছে কংগ্রেস শিবিরে। এ বার সম্ভবত সেই উপস্থিতি তিনি ছড়িয়ে দিলেন শাসক শিবিরেও, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy