Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষিত বাঙালির মন পেতে ভরসা প্রণবই

শিক্ষিত বাঙালির মন পেতে এ বার প্রণবের সিলমোহরকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি-আরএসএস। বাংলায় বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেও শিক্ষিত মহলে বিজেপি-আরএসএস সম্পর্কে নাক কোঁচকানো মনোভাব রয়েই গিয়েছে বলে দল মনে করে। বিজেপির আশা,  শিক্ষিত বাঙালির আইকন, কংগ্রেসি প্রণববাবু সঙ্ঘের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর বাঙালি নতুন করে ভাববে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০৪:২০
Share: Save:

আরএসএস-এর সদর দফতরেই শুধু যাননি প্রণব মুখোপাধ্যায়। আরএসএস প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারকে তিনি ‘ভারমাতার মহান সন্তান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

শিক্ষিত বাঙালির মন পেতে এ বার প্রণবের সিলমোহরকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি-আরএসএস। বাংলায় বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেও শিক্ষিত মহলে বিজেপি-আরএসএস সম্পর্কে নাক কোঁচকানো মনোভাব রয়েই গিয়েছে বলে দল মনে করে। বিজেপির আশা, শিক্ষিত বাঙালির আইকন, কংগ্রেসি প্রণববাবু সঙ্ঘের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর বাঙালি নতুন করে ভাববে।

বিজেপি নেতাদের দাবি, প্রণববাবু নিজে কোনও দিনই আরএসএস-এর প্রতি কংগ্রেসি ছুঁতমার্গ নিয়ে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। তিনি নেহরু-পন্থীও নন, বরং রাজেন্দ্রপ্রসাদ, সর্দার পটেলের জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। উল্টো দিকে কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, প্রণববাবু নেহরুর বহুত্ববাদ সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই সঙ্ঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁদের আয়না দেখিয়ে এসেছেন।

প্রণববাবুর নাম ব্যবহার করে বাঙালি শিক্ষিত সমাজকে প্রভাবিত করা যাবে? সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলছেন, ‘‘বিজেপি জানে, রামনবমী করে বাংলার শিক্ষিত, মধ্যবিত্তর সমর্থন মিলবে না। তাই প্রণববাবুর মতো শিক্ষিত সমাজে গ্রহণযোগ্য কাউকে তুলে ধরার পরিকল্পনা করছেন।’’ বিজেপির পলিসি রিসার্চ শাখার সদস্য, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘‘বাঙালির কাছে আরএসএস নতুন নয়। ১৯৫১-য় গোলওয়ালকরের কাছে গিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তাঁর সমর্থনে জনসঙ্ঘ শুরু করেন। কিন্তু গত ৪০ বছরে এই সংস্কৃতি ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।’’ সেই ইতিহাস মনে করিয়ে দিতেই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবসে কলকাতায় যাচ্ছেন অমিত শাহ।

আরও পড়ুন: লালু ৭০, মিলেমিশে কেক কেটে ঐক্য-বার্তা দুই ছেলের

তার আগে মে মাসে অমিত শাহ বাংলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশ দিয়েছেন, বাঙালি বিশিষ্ট জনেদের কাছে টানতে হবে। অমিত নিজে ইতিমধ্যেই বিশিষ্ট জনেদের বাড়ি গিয়ে দেখা করা শুরু করেছেন। সেই ‘সম্পর্ক সে সমর্থন’ উদ্যোগের অংশ হিসেবেই বিজেপি নেতারা শঙ্খ ঘোষ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিদের তালিকা করেছেন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমর্থন চাওয়া হবে। ২০১১-র বিধানসভা ভোটের আগে বিশিষ্ট জনেদের বড় অংশ তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একই পথ নিতে চায় বিজেপিও। তৃণমূল অবশ্য তাতে চিন্তিত নয়। তাঁদের দাবি, মানুষ কাজ দেখেই তাঁদের ভোট দেবেন। বিশিষ্ট জনেরাও তার ব্যতিক্রম হবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE