Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

করোনা-ত্রাণের হিসেব নিয়ে প্রশ্ন

এ বার ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণার পরে প্রশ্ন উঠেছে, কোথা থেকে এই ১.৭ হিসেবটা এল?

নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই।

নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৬
Share: Save:

নির্মলা সীতারামন এবং ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা! এক হলেই রহস্য। যার জবাব মেলে না।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে নির্মলা সীতারামনের প্রথম বাজেটের পরে প্রশ্ন উঠেছিল, ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার হিসেব কোথায় গেল? এ বার করোনাভাইরাসের প্রকোপের পরে অর্থমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা ঘোষণার পরে প্রশ্ন উঠেছে, এই ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার হিসেব কোথা থেকে এল? ২০১৯-এর জুলাইয়ে প্রথম বাজেট পেশ করেছিলেন নির্মলা। ২০১৮-১৯-এর আয় দেখিয়েছিলেন আনুমানিক ১৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু আর্থিক সমীক্ষায় একেবারে শেষ হিসেব ধরে ছিল, সরকারি আয় আসলে ১৫.৬ লক্ষ কোটি টাকা। নির্মলার হিসেবের তুলনায় ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা কম। অর্থমন্ত্রী কি ভাবে বাজেটের অঙ্ক মেলালেন, তার উত্তর মেলেনি।

এ বার ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণার পরে প্রশ্ন উঠেছে, কোথা থেকে এই ১.৭ হিসেবটা এল? ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও অর্থ মন্ত্রকের উত্তর মেলেনি। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সদস্য, অর্থনীতিবিদ এম গোবিন্দ রাও মনে করেন, “সম্ভবত ত্রাণ প্যাকেজের আসল পরিমাণটি অনেক কম”।

অর্থ মন্ত্রক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গরিবদের জন্য সব রকম সুরাহার অঙ্ক কষেও ১ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকার মতো হিসেব মিলছে। বাকি প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার কোনও হিসেব নেই। অর্থ মন্ত্রক কর্তাদের যুক্তি, পিএম-কিষাণ প্রকল্পে ৮.৭ কোটি কৃষককে ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার হিসেব বাজেটেই ধরা রয়েছে। বাড়তি কোনও খরচ হচ্ছে না। একই ভাবে মনরেগা-য় বাড়তি ২০ টাকা দৈনিক মজুরি দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে, তারও হিসেব বাজেটেই ধরা রয়েছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষের প্রশ্ন, “যেখানে ঘরবন্দির জেরে কোনও কাজই হচ্ছে না, সেখানে মজুরি বাড়িয়েই বা লাভটা কী হবে?”

অর্থমন্ত্রী নির্মাণ কর্মীদের জন্য কল্যাণ তহবিল থেকে ৩১ হাজার কোটি টাকা খরচের ঘোষণা করেছেন। নির্মাণ সংস্থার থেকে সেস বাদ আদায় করা সেই টাকাও তহবিলেই ছিল। তার জন্য কেন্দ্রের বাড়তি খরচ নেই। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, খরচের বড় জায়গা মূলত দুটি। এক, তিন মাস ধরে বিনামূল্যে চাল-গম-ডাল দেওয়ার জন্য প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এ ছাড়া ২০ কোটির বেশি মহিলার জনধন অ্যাকাউন্টে তিন মাসে মোট ১,৫০০ টাকা দিতে খরচ হবে প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা। প্রভিডেন্ট ফান্ডের দায় নিতে ৫ হাজার কোটি টাকা ও গরিব বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীদের ১ হাজার টাকা করে দিতে ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। জয়তীর মতে, “সরকারের উচিত ছিল গরিব মানুষের হাতে আরও বেশি নগদ টাকা তুলে দেওয়ায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Nirmala Sitharaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE